
অনেকেই ঘুম ভাঙার পর শরীরে অস্বস্তি, পেশিতে টান বা ব্যথা অনুভব করেন। কখনো পায়ের পাতায় ভর দিলে ব্যথা হয়, কখনো হাত-পা পর্যন্ত ভারী লাগে। যদি প্রায় প্রতিদিন এমনটা হয়, তাহলে বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
সম্ভাব্য কারণগুলো
১. ঘুমের মান খারাপ হওয়া
রাতে পর্যাপ্ত সময় ঘুমালেও যদি ঘুম গভীর না হয়, বারবার ঘুম ভেঙে যায় বা অস্বস্তিকর অবস্থায় ঘুমান, তাহলে শরীরের কোষ ঠিকভাবে পুনরুদ্ধার হতে পারে না। ফলস্বরূপ সকালে ব্যথা, ক্লান্তি ও অস্বস্তি নিয়ে দিন শুরু হয়।
২. মানসিক চাপ বা স্ট্রেস
দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপ থাকলে তা শরীরেও প্রভাব ফেলে। পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে, ব্যথা অনুভূত হতে পারে এবং ঘুম ভাঙার পরও শরীর স্বাভাবিক সতেজতা ফিরে পায় না।
৩. পর্যাপ্ত ব্যায়াম না করা
যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না, তাঁদের শরীরে রক্তসঞ্চালন ও পেশির নমনীয়তা কমে যায়। এর ফলেও সকালে পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে।
৪. অতিরিক্ত ব্যায়াম করা
যেমন ব্যায়ামের অভাব ক্ষতিকর, তেমনি অতিরিক্ত ব্যায়ামও শরীরে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম ছাড়া টানা ব্যায়াম পেশিতে চাপ তৈরি করে এবং ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়।
৫. খাবারের ঘাটতি বা ক্ষতিকর খাদ্যাভ্যাস
শরীরে যদি প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের ঘাটতি থাকে, তাহলে পেশি দুর্বল ও ব্যথাযুক্ত হতে পারে। আবার অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অ্যালকোহলও প্রদাহ ও ব্যথা বাড়িয়ে দেয়।
করণীয়
ভালো ঘুমের জন্য:
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে ও উঠতে অভ্যাস করুন।
আরামদায়ক ম্যাট্রেস ও বালিশ ব্যবহার করুন।
ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ এড়িয়ে চলুন।
ঘুমানোর ২–৩ ঘণ্টা আগে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন এবং ক্যাফেইন যতটা সম্ভব কমান।
স্ট্রেস কমানোর উপায়:
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন।
প্রয়োজন হলে বন্ধু, পরিবার বা কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও আরামদায়ক পরিবেশে সময় কাটান।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন:
বেশি করে শাকসবজি, ফল, বাদাম ও বীজ খান।
তৈলাক্ত মাছ, আদা ও হলুদের মতো প্রদাহনাশক খাবার যুক্ত করুন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অতিরিক্ত মিষ্টি যতটা সম্ভব কমান।
সুস্থ রুটিন, সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শরীরের এই অস্বস্তি ও ব্যথা দূর করা সম্ভব হতে পারে। তবে সমস্যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।