
চোখের চারপাশে ফোলা থেকে হাত-পা ফুলে যাওয়া—এমন বেশ কিছু লক্ষণ শরীরে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি।
এটি শরীরের বর্জ্য পরিষ্কার করা, তরল ভারসাম্য বজায় রাখা এবং প্রয়োজনীয় খনিজ নিয়ন্ত্রণ করার কাজ করে। তবে কিডনি দুর্বল বা চাপের মধ্যে থাকলেও অনেক সময় প্রাথমিক লক্ষণগুলো অবহেলিত হয়।
গুরগাঁওয়ের সিকে বিরলা হাসপাতালের কনসালট্যান্ট নেফ্রোলজিস্ট ডা. মোহিত খিরবাত এইচটিই লাইফস্টাইল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে এসব লক্ষণ শনাক্ত করা গেলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি এড়ানো সম্ভব এবং কিডনি ভালো রাখা যায়।”
তিনি কিডনিতে চাপ পড়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ তুলে ধরেন—
প্রস্রাবের অভ্যাসে পরিবর্তন
স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বা কম প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাব ফেনাযুক্ত হওয়া কিংবা প্রস্রাবে অসুবিধা হওয়া কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
অবিরাম ক্লান্তি ও দুর্বলতা
কিডনি লোহিত রক্তকণিকা তৈরির সঙ্গে জড়িত একটি হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে। কিডনির সমস্যা হলে শরীরে রক্তকণিকা কমে গিয়ে অ্যানিমিয়া হতে পারে, ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও শক্তি হ্রাস ঘটে।
গোড়ালি, পা বা হাতে ফোলা
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে তরল জমে গিয়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে ওঠে। এটি কিডনির তরল ও লবণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ফল।
চোখের চারপাশে ফোলা
প্রস্রাবে প্রোটিনের ক্ষতি হলে চোখের চারপাশে বারবার ফোলা দেখা দেয়। এটি কিডনি ক্ষতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত।
শ্বাসকষ্ট
কিডনির কারণে শরীরে তরল জমে ফুসফুসে পানি আসা বা অ্যানিমিয়া হলে বিশ্রাম নিলেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
অবিরাম চুলকানি বা ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া
কিডনি ঠিকভাবে বর্জ্য ছেঁকে না ফেলতে পারলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে ত্বক শুষ্ক, চুলকানি ও জ্বালাভাব তৈরি করতে পারে।
অস্বাভাবিক কোমর বা পিঠে ব্যথা
বারবার কোমর বা পাশে ব্যথা হলে তা কিডনিতে সংক্রমণ, পাথর বা অন্যান্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
ডা. খিরবাত বলেন, “আপনার কিডনি নীরবে প্রতিনিয়ত শরীরকে সুস্থ রাখে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব এবং কিডনির কার্যকারিতা রক্ষা করা যায়।”
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস