বিএনপি-জামায়াতের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আ’হত ১৩

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া মোশাররফ আলী মিয়ার বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে স্থানীয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, ‘ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদল নেতা নয়নমণি, মুহাম্মদ নয়ন, যুবদল নেতা মাঈনুল উদ্দিন, নয়ন হায়দার, ছাত্রদল কর্মী মো. তায়েব, এনামুল হক ও তানভীর হাসান, এবং জামায়াত কর্মী মো. শওকত, রাকিব উদ্দীন,

মো. জমশেদ, আকিব ও ছাত্রশিবির নেতা আজগর হোসাইন। এদের আহত জামায়াত কর্মী রাকিবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অন্যান্য আহতরা বাঁশখালীর বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে বাহারছড়া দারুল ইসলাহ মাদ্রাসার মসজিদে ইসলামী ছাত্রশিবির একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করে। ছাত্রদল নেতারা ওখানে গিয়ে ওই মাদ্রাসায় অতীতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও বর্তমানে প্রোগ্রাম কেন জানতে চাইলে দুইপক্ষের মধ্যে প্রথমে তর্কবিতর্ক পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে দলের কর্মীদের নিয়ে মোশাররফ আলী মিয়ার বাজারে জড়ো হয়ে মহড়া দিলে সেখানে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রথমে ফাঁড়ির পুলিশ পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ছাত্রশিবিরের অভিযোগ, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বাঁশখালী দারুল ইসলাহ দাখিল মাদ্রাসার মসজিদে ছাত্রশিবিরের একটি প্রোগ্রামে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালালে ঘটনার সূত্রপাত হয়। তবে ছাত্রদলের দাবি, ওই মাদ্রাসায় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ বলে গোপনে ছাত্রশিবিরের প্রোগ্রাম করে। এবং সেই প্রোগ্রামে বিএনপি ও তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রদল প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়।’

জানতে চাইলে বাহারছড়া জামায়াতের আমির হাসান আজাদ বলেন, ‘ বিকেলে মাদ্রাসা ছুটির পর মসজিদে পবিত্র কোরআন ক্লাসের আয়োজন করেছিল শিবির। সেখানে ছাত্রদল হামলা করে রাকিব নামের একজন কর্মীকে আহত করেছেন। রাতে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য গেলে সেখানে আমাদের ওপর আর এক দফা হামলা চালানো হয়। এতে আরও সাত থেকে আটজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’

বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লোকমান আহমদ বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি শহরে ছিলাম। পরে জানতে পারি শিবিরের একটি প্রোগ্রামে তারেক রহমানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। মোশাররফ আলী বাজারে মহড়া দিয়ে বিএনপির লোকদের উপর হামলা চালায় তারা। এ ঘটনায় বিএনপির ১০/১২জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাহারছড়া মোশাররফ আলী মিয়ার বাজারে জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পুলিশের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থলে স্বয়ং আমি নিজে ছিলাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *