
যার এক অঙ্গুলি হেলনে যুদ্ধ সংঘাত বেঁধে যায় এবং অগণিত মানুষের প্রাণ ঝরে যায় নিমিষেই, এমনকি অধস্তন দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণও করে থাকেন এই দেশের প্রেসিডেন্ট, সেই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাঝ আকাশে এমন বিপদে পড়বেন, তা কল্পনাও করেননি। তার ঘাড়ের কাছে যেন নিঃশ্বাস ফেলছিল যমদূত।
অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছিলেন। বিমান বাহিনীর এয়ারফোর্স ওয়ান-এ চেপে উড়ে যাচ্ছেন লন্ডনের উইন্ডসর ক্যাসেলে। কিন্তু মাঝ আকাশেই বিপত্তি ঘটলো।
ট্রাম্পের বিমানের কাছে চলে এসেছিল স্পিরিট এয়ারলাইন্স
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার। প্রেসিডেন্টের বিমান থাকা সত্ত্বেও এয়ারফোর্স ওয়ানের মাত্র আট মাইল কাছে চলে এসেছিল স্পিরিট এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। স্পিরিটের পাইলট তখন নাকি আইপ্যাড চালানোতে ব্যস্ত ছিলেন।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার দ্রুত স্পিরিট এয়ারলাইন্সের বিমানটিকে ২০ ডিগ্রি বাঁক নিয়ে দূরে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পাইলট ছিলেন একগুঁয়ে। প্রথম নির্দেশনায় তিনি সরে আসেননি। টানা তিনবার কন্ট্রোলার রুম থেকে পাইলটকে সরে যেতে বলা হলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। চতুর্থবারে গিয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোলার তাকে ধমক দিয়ে বলেন, “মনোযোগ দিন!”
এরপর স্পিরিট এয়ারলাইন্সের বিমানটি ২০ ডিগ্রি বাঁক নেয়। ট্রাম্পের বিমান যাচ্ছিল যুক্তরাজ্যে, অন্যদিকে স্পিরিট এয়ারলাইন্সের বিমানটি যাচ্ছিল বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যেখানে ছিলেন সাধারণ যাত্রীরা।
পাইলটের বেপরোয়া আচরণ ও কন্ট্রোলারের ক্ষোভ
নিউইয়র্ক সেন্টার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার তখন স্পিরিট এয়ারলাইন্সের পাইলটকে রেডিওতে বলেন, “স্পিরিট ১৩, ২০ ডিগ্রি ডানে বাঁক নিন।”
পাঁচ সেকেন্ড পরেও কোনো সাড়া না দেওয়ায় তিনি আবার বলেন, “মনোযোগ দিন স্পিরিট। ডানদিকে ২০ ডিগ্রি বাঁক নিন।” এরপরও জবাব না দেওয়ায় ট্রাফিক কন্ট্রোলার পাইলটকে জোরে ধমকে ওঠেন। পাইলট চতুর্থবারে বুঝতে পেরে ডানদিকে বাঁক নেন।
এরপর ট্রাফিক কন্ট্রোলার আবার পাইলটের সাথে রেডিওতে যোগাযোগ করে বলেন, “স্পিরিট, বাম ডানার আট মাইল দূরে ট্রাফিক আছে। সাদা ও নীল রঙের বিমানের দিকে খেয়াল রাখুন।”
সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো, পরবর্তীতে কন্ট্রোলার অভিযোগ তোলেন যে, পাইলট বিমানে বসে আইপ্যাড চালাচ্ছিলেন, যার কারণে তিনি নির্দেশনা শুনতে পাচ্ছিলেন না। বারবার যোগাযোগ করতে হচ্ছে কেন, এই প্রশ্ন করে কন্ট্রোলার চিৎকার করে বলেন, “দয়া করে আইপ্যাড চোখের সামনে থেকে সরান!”