হাত নেড়ে সমর্থকদের ‘গুড বাই’ বললেন মেসি

আর্জেন্টিনার মাটিতে জাতীয় দলের জার্সিতে আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলবেন না লিওনেল মেসি। বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার ভোরে ২০২৬ বিশ্বকাপ লাতিন আমেরিকা অঞ্চল বাছাইপর্বে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচটিই ছিল ঘরের মাঠে তার শেষ ম্যাচ।

এই ম্যাচে জোড়া গোলের মাধ্যমে দলকে ৩-০ ব্যবধানের জয় উপহার দিয়ে আর্জেন্টিনা ভক্তদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন মেসি। দলের হয়ে অন্য গোলটি করেন লাওতারো মার্টিনেজ।

আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সর্বকালের সেরা এই খেলোয়াড়কে বিদায় দিতে প্রস্তুুতি নিয়ে এসেছেন ভক্তরাও। যে কারণে ম্যাচের পুরোটা সময় জুড়েই মেসিকে উৎসর্গ করে গান গেয়েছেন তারা।

ম্যাচ শেষে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন মেসি। এরপর হাত নেড়ে দর্শকদের বিদায় জানান এই ফুটবল জাদুকর। রাজধানী বুয়েন্স আইরেসের এস্তাদিও মনুমেল্টাল স্টেডিয়ামে মেসিকে বিদায় জানানোর এই আবেগঘন দৃশ্য আবার কত বছর পর দেখা যাবে,

সেটি কারো কল্পনায় হয়তো নেই। হয়তো এই রাতটি আর্জেন্টিনার ফুটবল ভক্তদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ম্যাচ শেষে মেসি বলেন, ‘অনেক আবেগ, অনেক কিছু আমি এই মাঠে অনুভব করেছি। আর্জেন্টিনায় আমাদের মানুষের সঙ্গে খেলা সবসময় আনন্দের। আমরা বহু বছর ধরে ম্যাচ উপভোগ করছি। এখানে এভাবে শেষ করতে পারা আমার সবসময়কার স্বপ্ন ছিল।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘বার্সেলোনায় বহু বছর ধরে আমি ভালোবাসা পেয়েছি, আর আমার স্বপ্ন ছিল একইভাবে নিজের দেশেও তা পাওয়া। অনেক কিছু বলা হয়েছিল বছরের পর বছর ধরে। কিন্তু আমি সব ভালো জিনিসগুলোই মনে রাখবো।

দলের সঙ্গে আমরা চেষ্টা করেছি, অনেকবার পাইনি, কিন্তু শেষে আমরা পেয়েছি। সব অভিজ্ঞতাই অসাধারণ ছিল। আজকের ম্যাচটি ছিল এখানে আমার শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।

আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা নিশ্চিত করে ফেলেছে আর্জেন্টিনা। ১৭ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৩৮। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হতে যাওয়া আসন্ন বিশ্বকাপে খেলতে চাইলেও শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে মেসির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

ইন্টার মিয়ামি তারকা বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, সম্ভবত আর কোনো বিশ্বকাপে খেলবো না। বয়সের কারণে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি (২০২৬ বিশ্বকাপের মূল পর্বে), তাই আমি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত বোধ করছি। প্রতিদিন দিন যেভাবে কাটছে, সেভাবেই এগোচ্ছি। যখন ভালো লাগছে, উপভোগ করি। যখন ভালো লাগছে না, তখন মাঠে থাকতে চাই না। তাই এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মৌসুম শেষ করব, এরপর প্রি-সিজন আসবে। এরপর বিশ্বকাপের ছয় মাস বাকি থাকবে। তখন দেখা যাবে আমি কেমন অনুভব করছি। আশা করছি ভালো প্রি-সিজন কাটবে এবং এমএলএস মৌসুম শেষ ভালোভাবে করব। এরপর (বিশ্বকাপে খেলার) সিদ্ধান্ত নেব।’

মেসি আর্জেন্টিনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং সর্বাধিক ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়। ২০০৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছিল তার। ২০১৪ ও ২০২২ সালে দলকে ফাইনালে তোলেন এবং কাতারে সর্বশেষ সংস্করণে ট্রফিও জেতেন।

আর্জেন্টিনা পরবর্তী ম্যাচে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে গুয়ায়াকিলে। তবে মেসি জানিয়েছেন, শেষ বাছাই ম্যাচে তিনি খেলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *