
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি বিদ্যালয়ে আগুন লাগার আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ সময় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান বিধ্বংসের ঘটনা মনে করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় জমে।বুধবার দুপুরে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম ভবনের তৃতীয়তলায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের তৃতীয়তলার বারান্দায় আসন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষার্থীরা একটি প্রজেক্ট তৈরি করার সময় মাল্টিপ্লাগের মাধ্যমে বিদ্যুতের সংযোগ দিতে গিয়ে হঠাৎ করে বিকট শব্দ হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা আগুন লেগে গেছে মনে করে আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে নামতে শুরু করে।
হাসপাতালে ভর্তি আহত শিক্ষার্থীরা হলো- আমেনা জাহানা আরিশা (৮ম), সোহামণি ইতি (৬ষ্ঠ), তাসনোভা ইসরাত (৭ম), মাকিয়া আক্তার লামিয়া (৮ম), ফারিয়া সুলতানা (৮ম), তানজিনা আক্তার (৭ম), নোহা ইসলাম (৮ম), কলি (৮ম), আরিফা (৮ম), রুহান (৭ম), ফাতেমা আক্তার মীম (৭ম)। এর মধ্যে রুহানকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী সোহামণি ইতি ও ফাতেমা আক্তার মীম জানায়, আগুন লেগেছে শুনে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক কেশব দেবনাথ জানান, কিছু হয়নি বলার পরও শিক্ষার্থীরা আমাকে ধাক্কা মেরেই রুম থেকে বের হয়ে যায়। পরে নামতে গিয়ে যারা ব্যথা পেয়েছে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রস্তুতির সময় মাল্টিপ্লাগের শর্টসার্কিটের শব্দ শুনেই তারা আতঙ্কে রুম থেকে আগুন আগুন বলে চিৎকার করে দৌড়াতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইমুল হুদা জানান, শিক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ভয়ে একটি ছেলের শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আশা করছি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা বাসায় চলে যেতে পারবে।
এদিকে এ ঘটনার খবর গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয় ও হাসপাতালে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা (শিক্ষা ও আইসিটি) তাহমিনা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঞা, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি হাসপাতালে ছুটে যান এবং শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিদুল ইসলাম জানান, মাল্টিপ্লাগের শর্টসার্কিটের শব্দ থেকে আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থী ব্যথা পেয়েছে।