সবচেয়ে আগে আমার ম’রার কথা ছিল: হেড পিয়ন মনা

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার কথা জানালেন প্রতিষ্ঠানটির হেড পিয়ন মোহাম্মদ নুরুন্নবি মনা। সোমবার (২১ জুলাই) প্রতিদিনের মতোই দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।

কিন্তু ওই দিন ঘটেছিল এক ভয়ংকর ট্র্যাজেডি—যা তার জীবন বদলে দিয়েছে। মনা জানান, ঘটনার সময় তিনি ল্যাব ক্লাস শেষে কো-অর্ডিনেটর রুমে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর রাখতে গিয়েছিলেন।

আলমারিতে চাবি ঢোকানোর সময়ই বিকট এক বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। চোখের সামনে ভয়ংকর দৃশ্য। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে।

তিনি বলেন, “সবার আগে আমার মরার কথা ছিল। আমি এখানে প্রতিদিন ১টা ৩০ পর্যন্ত থাকি। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।”

স্কুলের প্রধান ফটকে দায়িত্বে থাকা মনা আরও বলেন,

“ছুটি হলে আমি হ্যান্ডমাইক নিয়ে বাইরে যাই, গার্ডিয়ানদের কাছে বাচ্চাদের তুলে দিই। কাল থেকে এখানে আছি, কিছুই খেতে পারিনি। কি বলব, বলার ভাষা নেই।”

বিমান বিধ্বস্তের পরপরই রুম থেকে বের হয়ে আসেন মনা। আগুন ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ছিল চারদিক। দক্ষিণ পাশের কিছু শিক্ষার্থীর দিকে ছুটে যান তিনি ও অন্যান্য সহকর্মীরা। সেখানে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন তারা। নিজের জীবন বাজি রেখে যেভাবে দৌড়ে গেছেন বাচ্চাদের জন্য—তা সত্যিই বীরোচিত।

উল্লেখ্য, এই ভয়াবহ ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ জন এবং আহতের সংখ্যা ১৬৫। তথ্যটি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

মনা এখনো ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। কিন্তু তার চোখে একটাই প্রশান্তি—যাদের সম্ভব, তিনি বাঁচাতে পেরেছেন। আর ভাগ্যক্রমে, হয়তো অলৌকিকভাবে—তিনি নিজেও বেঁচে গেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *