
সম্প্রতি মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনায় পুরো দেশ এখন তোলপাড়। সামাজিক মাধ্যমে এই ব্যবসায়ীর হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে নেটিজেন থেকে শুরু করে সর্বমহলে আলোচনা হতে থাকে মানুষ হয়ে মানুষকে এতটা নির্মমভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করার বিষয়টি।
এসব নরপিশাচরা বর্তমানে রয়েছে পুলিশি হেফাজতে কেউ বা আবার রিমান্ডে। এবার তাদের থানা হাজতের একটি ভিডিও সামজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায়, ক্যামেরার পিছনে থাকা পুলিশের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে করা প্রশ্নে এক হত্যাকারীকে অবাক করা উত্তর দিতে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, ক্যামেরার পিছনে থাকা পুলিশ সদস্য (সম্ভাব্য) হত্যাকারী ব্যক্তির দিকে ক্যামেরা তাক করে জিজ্ঞেস করছেন, ‘এই তোমার নাম কি?’ উত্তরে সেই ব্যক্তি বলেন, ‘মীর জাফর’। এবার তার পাশে থাকা আরেক হত্যাকারীকে সেই পুলিশ সদস্য জিজ্ঞেস করেন, তোমার নাম কি? এবার পাশে থাকা মীর জাফরও সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন এই তোর নাম কি? উত্তরে সে তার নাম জানায়, আলমগীর!
এবার মীর জাফরকে সেই পুলিশ সদস্যের প্রশ্ন, ‘এই যারে মারলেন এইভাবে মারলেন কেন?’ উত্তরে মীর জাফর বলে বসলেন, ‘ওই একটা অমানুষ এর লাইগা।’ এবার পুলিশের প্রশ্ন, ‘মানুষ মানুষরে কোনদিন এইভাবে মারে?’ উত্তরে খুনি মীর জাফর দিলেন নরপিশাচের মত উত্তর। সে এবার বললো, ‘এর চেয়ে ভয়ংকর ভাবেও মারে।’
এবার সেই পুলিশের প্রশ্ন, ‘এর যে দুইটা বাচ্চা কাইচ্চা আছে এরা কিভাবে মানুষ হবে বলো, বউ আছে।’ এবার মীর জাফরের উত্তর ঠিক ইতিহাসের সেই মীর জাফরের মতই। উত্তরে সে বলে, ‘যে পার্টনারের টেকা (টাকা) পয়সা সম্পদ সব নিয়া নিছে ওরও তো বাচ্চা কাচ্চা আছে। ওই ছ্যারা কিভাবে বাঁচবো? ঐ ছ্যারার মায়েরে যে ধর্ষণ করছে!’
এবার আবারো পুলিশের প্রশ্ন, ‘তোমরা যে কাজটা করছো এই কাজটা করা কি তোমাদের ঠিক হইছে?’ উত্তরে মীর জাফর বলে, ‘এটা আল্লাহ ভালো জানে।’ পুলিশের প্রশ্ন, ‘তোমরা জানো না?’ মীর জাফরের এবারের উত্তর, ‘না আমরা যদি বুঝতাম তাহলে কি আর করতাম?’
এবার পুলিশের সেই সদস্য জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা বোঝো না? বিবেক-বুদ্ধিহীন হয়ে গেছো? বলো?’ এবার পুলিশের আরেক জন মীর জাফরকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ওর আম্মুরে যে ধর্ষণ করছে তো আইন আছিলো না?’ এবার বাজে ভাষায় মীর জাফর উত্তর দিয়ে বসেন। ‘(……) সবার ইজ্জত আইনের ওপর ছেড়ে দেয় নাকি?’ এরপর পুলিশের প্রশ্ন, ‘এই জন্য নিজেরাই মারছেন?’ এবার উত্তরে মীর জাফরের উল্টো অভিযোগ, ‘না আমাগো মারছে না?’
এভাবেই পুলিশের কথার উত্তর দেন সোহাগকে দিন-দুপুরে অমানুষের মত অত্যাচার করে পাথর চাপা দিয়ে মারা নরপিশাচ মীর জাফর। তার কথার ভাবখানা এমন যে সে কিছ্ইু করেনি। অথচ বর্বর সেই মধ্যযুগীয় কায়দায় পাথর বারবার সোহাগের শরীরে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করা ব্যক্তিদের মধ্যে মীর জাফরও একজন।