
ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা নিয়ে এবার মুখ খুলেছে চীন। এই হামলাকে ‘বর্বর’ আখ্যা দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, এ ধরনের সামরিক আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং পুরো অঞ্চলের শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলছে। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান, চীন এই পদক্ষেপকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং কূটনৈতিক সমাধানকেই একমাত্র পথ হিসেবে দেখে।
রবিবার (১৫ জুন) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইরান ও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এ সময় তিনি ইসরায়েলি আগ্রাসনের কড়া সমালোচনা করেন। ইসরায়েলের এই হামলা এমন এক সময় হলো, যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজছে। ফলে এই ধরনের হামলা শুধু অস্থিতিশীলতা বাড়ায় না, বরং আলোচনার সম্ভাবনাও ক্ষুণ্ণ করে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সায়ারের সঙ্গে ফোনালাপে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ইরানের ওপর সামরিক হামলা চালিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এটি চীন স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি বলেন, এই হামলা কেবল একটি দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত নয়, বরং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
ওয়াং আরও বলেন, যখন এখনো কূটনৈতিক উপায়ে ইরানের পারমাণবিক ইস্যু সমাধানের চেষ্টা চলছে, তখন এমন হঠকারী সামরিক পদক্ষেপ গোটা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। তাঁর মতে, সংঘাত নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
পরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন ওয়াং ই। এ সময় তিনি জানান, চীন ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার ওপর ইসরায়েলের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। তিনি এই ঘটনাকে “বর্বর হামলা” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি শুধু ইরানের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের জন্য একটি বিপজ্জনক নজির তৈরি করেছে।
ওয়াং ই আরও বলেন, চীন মনে করে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলি হামলা ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো দেশের ওপর এমন আগ্রাসন কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং শান্তির পথকে আরও কঠিন করে তোলে।
চীনের এই কঠোর প্রতিক্রিয়া ইসরায়েলের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা — সংঘাত নয়, সমাধানের পথ আলোচনায়। যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব আরও বেশি। তথ্যসূত্র : আল জাজিরা