ইসরায়েলের জন্য দুই শক্তিশালী দেশের ‘রেড লাইন’ ঘোষণা

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান (টু স্টেট সলিউশন) বাস্তবায়ন করতে জাতিসংঘ, ফ্রান্স এবং সৌদি আরবের উদ্যেগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যে বৈশ্বিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল, তা শেষ হয়েছে।

সম্মেলন শেষে অন্যান্য দেশগুলোর মতামত সাপেক্ষে ইসরায়েলের উদ্দেশে ‘রেড লাইন’ ঘোষণা করেছে দুই আয়োজক দেশ ফ্রান্স এবং সৌদি। আর সেই ‘রেড লাইন’ হলো পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সম্প্রসারণ কার্যক্রম।

সম্মেলন শেষে এক যৌথ ঘোষণাপত্রে ফ্রান্স এবং সৌদি আরব বলেছে, “ইসরায়েলকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে এবং গাজায় বন্দি সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

“পাশাপাশি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিতে হবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ অবাধ রাখতে হবে।”

“এছাড়া পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে একমত হয়েছে সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো।

তাই এখন থেকে পশ্চিম তীর ইসরায়েলের জন্য রেড লাইন। পশ্চিম তীরে যে কোনো ধরনের সম্প্রসারণ কার্যক্রম ইসরায়েলের গুরুতর পরিণতি বয়ে আনবে এবং বর্তমানে ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের শান্তিচুক্তিসহ অন্যান্য যেসব চুক্তি রয়েছে, সেগুলোকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।”

সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ ও গাজার প্রশাসন থেকে বিদায় নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

প্রায় দু’মাস ধরে প্রস্তুতির পর গত কাল সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মিলনায়তনে হয়েছে এই সম্মেলন। ইসরায়েল এবং তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই বর্জন করেছে এ সম্মেলন।

এই সম্মেলনেই ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, অ্যান্ডোরা, মোনাকো। সম্মেলনের আগে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও পর্তুগাল।

সোমাবার ইসরায়েলের জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের সদস্য ড্যানি ডেনন বৈশ্বিক এ সম্মেলকে ‘সার্কাস’ উল্লেখ করে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “এই সম্মেলনে কোনো কাজ হবে বলে আমাদের মনে হয় না এবং আমরা মনে করি, সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করতে এই সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।”

তবে আগের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “আমরা চাই, (আল আকসা অঞ্চলে) পাশাপাশি দু’টি রাষ্ট্র থাকবে। একটি রাষ্ট্র হবে ইসরায়েল, যা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে; অপর রাষ্ট্রটি হবে ফিলিস্তিন— যা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে। আমাদের একমাত্র দাবি আল আকসা অঞ্চলে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নীতির বাস্তবায়ন।” সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *