
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সম্প্রতি সফর করেছেন ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোথরিচ। দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে যিনি একাধিক পশ্চিমা দেশের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন।
দিল্লিতে তিনি ভারতের কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং আর্থিক সহযোগিতা আরও মজবুত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতের অর্থমন্ত্রণালয় এই বৈঠককে “গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
সহযোগিতার নতুন দিক
বৈঠকে নির্মলা সীতারামন ইসরাইলের প্রতি সাইবার সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা, উদ্ভাবন ও উন্নত প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব জানান। অন্যদিকে স্মোথরিচ একে দুই দেশের “যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” বলে মন্তব্য করেছেন।
বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক
২০২৪ সালে ভারত-ইসরাইলের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আনুমানিক ৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর বড় একটি অংশ কেন্দ্রীভূত রয়েছে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে। বর্তমানে ভারত ইসরাইলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ।
বিতর্কিত সময়ে সফর
ইসরাইল যখন গাজায় সামরিক অভিযানের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে, ঠিক সে সময়ই ভারত সফর করলেন স্মোথরিচ। আলজাজিরার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে, গাজা যুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় কয়েকটি কোম্পানি ইসরাইলকে রকেট ও বিস্ফোরক সরবরাহ করেছে। সেই সময় দিল্লিতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হলেও ইসরাইলের সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশকে প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়।
শ্রমবাজারে নতুন অধ্যায়
বর্তমানে ইসরাইল ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি গাজায় সংঘাতের কারণে ফিলিস্তিনি শ্রমিক সংকট দেখা দিলে ইসরাইল সরকার এক লাখ ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগের অনুমোদন দেয়, যা দুই দেশের শ্রমবাজার সহযোগিতার নতুন দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে।