
সেপ্টেম্বরের এক সন্ধ্যায় দিল্লির সাউথ ব্লকের ভেতরে বসে নরেন্দ্র মোদি গভীর চিন্তায় নিমগ্ন, তার দৃষ্টি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মো.ইউনুস এবং তার কার্যক্রমের ওপর। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, বরং ভূরাজনীতি, কূটনীতি এবং ভারতের ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপট নিয়ে উদ্বিগ্ন মোদি।
এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও কেরালায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির এবং শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে মোদি বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে তারা বাংলাদেশের ঘটনাগুলো ঘিরে প্রশ্ন তুলছে যে, “আমরা কার জন্য এতকিছু করছি?”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের নতুন শক্তির উত্থান এবং প্রফেসর ইউনুসের প্রভাব মোদির কূটনৈতিক কৌশলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। ভারতের মিডিয়া ও কূটনৈতিক মহল মনে করছে, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষার জন্য মোদি সরকার অতিরিক্ত সক্রিয় হয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডে-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, মোদির জনপ্রিয়তা ২০২১ সালে ৭০ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে কমে ৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এছাড়া, ৯২ শতাংশ মানুষ মনে করছেন সংসার চালানো আগের চেয়ে কঠিন, এবং ৭২ শতাংশের মতে, বেকারত্বই প্রধান সমস্যা। অর্ধেক ভারতীয় বিশ্বাস করছেন যে গণতন্ত্র ঝুঁকিতে রয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো দলীয় স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান অবস্থায় শেখ হাসিনা ভারতের জন্য ন্যূনতম লাভজনক বিনিয়োগে পরিণত হয়েছেন। কংগ্রেস পুনরায় শক্তিশালী হয়ে ওঠায় বিরোধী জোট “ইন্ডিয়া অলায়েন্স” মোদির বিরুদ্ধে জোরালো কণ্ঠ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন, প্রফেসর ইউনুস ইস্যুতে মোদির অতিরিক্ত সক্রিয়তা ভারতের আন্তর্জাতিক ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
পশ্চিমা মিডিয়া যেমন ফ্রান্সের লা মন্ডে, যুক্তরাষ্ট্রের দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এবং জার্মানির ডার ইয়্যার স্পাইগেল সবগুলোই মোদির শাসন ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার রেকর্ডের সমালোচনা করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইতিহাস বারবার শিক্ষা দেয় যে অন্যায় চাপ দিয়ে একজন মানুষকে দমন করা যায়, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। মোদি সরকার এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে ব্যর্থ হলে, প্রফেসর ইউনুস ও বাংলাদেশের প্রভাব ভারতের কূটনৈতিক কৌশলে স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=URmTMNj6oD0