
কলম্বিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বন্দি থাকা ৭২ সেনার মধ্যে ২৭ জনকে উদ্ধার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই অঞ্চলটি কোকেন উৎপাদনের জন্যও পরিচিত। আলজাজিরা সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনী স্থানীয় সময় রবিবার এক বিবৃতিতে জানায়, এখনো ৪৫ জন সেনা সদস্য ‘গেরিলা শাসনের অধীনে স্বাধীনতাহীন অবস্থায় রয়েছে’।
সেনাবাহিনী আরো জানায়, ‘জাতীয় সেনাবাহিনী এলাকায় অবস্থান করছে, শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও অপহৃত সেনাদের ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
ঘটনাটি ঘটেছে কউকা বিভাগের মিকাই ক্যানিয়নে, যা কোকা চাষ ও সেন্ট্রাল জেনারেল স্টাফ নামে পরিচিতি সাবেক বিপ্লবী সশস্ত্র বাহিনীর (ফার্ক) একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জন্য পরিচিত। গোষ্ঠীটি নিয়মিতভাবে সামরিক অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে।
সেনাবাহিনীর মতে, সেনা সদস্যরা একটি সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় প্রায় ৬০০ লোক সান হুয়ান দে মিকাই এলাকায় ‘সেনা মোতায়েনকে বাধাগ্রস্ত’ করে। সেনা মোতায়েনের উদ্দেশ্য ছিল ‘মাদক পাচার ও অবৈধ খনির জন্য ব্যবহৃত রুটগুলোর নিয়ন্ত্রণ সহজ করা’।
গ্রামীণ এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করতে হিমশিম খাচ্ছে কলম্বিয়া। সেখানে মাদকচক্র ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ফার্কের সঙ্গে ২০১৬ সালের শান্তি চুক্তির পর ফেলে রাখা এলাকা নিয়ে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই করছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ওই অঞ্চল পুনর্দখলের জন্য অভিযান শুরু করেন। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েন।
পেত্রো এক্সে পোস্টে বলেছেন, সেনাদের মুক্তি দেওয়ার এখনই সময়। তিনি আরো লিখেছেন, ‘তারা তোমাদের সন্তানও হতে পারে। কলম্বিয়ার সন্তানদের একে অপরকে আলিঙ্গন করতে হবে এবং মা-বাবার চেয়ে দীর্ঘায়ু হতে হবে। আলোচনাকারী কমিশন প্রস্তুত এবং এটি প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বলা কথা।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোতে এ ধরনের আটক প্রায়ই ঘটে, যেখানে রাষ্ট্রের উপস্থিতি দুর্বল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বেশি। কিন্তু এক মাসেরও কম সময়ে এটি দ্বিতীয় ঘটনা, যখন ভেঙে যাওয়া ফার্ক গোষ্ঠীর সদস্যরা সেনাদের বন্দি করেছে।
গত মাসে গুয়াভিয়ারে প্রদেশে এক বন্দুকযুদ্ধের পর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নির্দেশে গ্রামবাসী ৩৩ সেনাকে আটক করে। ওই সংঘর্ষে সাবেক ফার্কের ১০ জন সদস্য নিহত হয়। সেই সময় সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, গ্রামবাসী নিহত বিদ্রোহীদের মরদেহ ফেরত চাচ্ছিল, যেগুলো প্রাদেশিক রাজধানীর মর্গে পাঠানো হয়েছিল। চার দিন পর সেনাদের মুক্তি দেওয়া হয়।- আলজাজিরা