লাল টি-শার্ট পরা যুবক নিয়ে যা বললেন ডিএমপির ডিবিপ্রধান

কাকরাইলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো লাল রঙের টি-শার্ট পরা যুবক ডিবির কেউ নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবিপ্রধান শফিকুল ইসলাম।

শনিবার (৩০ আগস্ট) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এদিকে শনিবার দুপুরে নিজের ফেসবকু পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

তিনি লিখেছেন, ‘লাল শার্ট পরা ব্যক্তি যাকে পিটিয়েছে সে নুরুল হক নুর নয়, সে ছাত্রনেতা সম্রাট। লাল শার্ট পরা ব্যক্তির ওপর দায় চাপিয়ে নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই।

সেনাবাহিনীর যারা নুরুল হক নুরের ওপর হামলা করেছে, তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এমনকি আমাদের কার্যালয়ে ঢুকে ও বাথরুম ভেঙে অসংখ্য নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করেছে সেনাবাহিনী।’

যুবকের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মীর আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার সময় লাল টি-শার্ট পরে গণঅধিকার নেতাদের ওপর হামলা করা ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ। খুব দ্রুত তাকে শনাক্ত করতে আমাদের কয়েকটি টিম কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ভিডিওতে দেখা লাঠি হাতে থাকা ওই ব্যক্তিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটক করলেও তাৎক্ষণিক বিষয়টি না জানায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগবিরোধী মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত ৮টার কিছু পর কাকরাইল এলাকায় মশাল মিছিল বের করে গণঅধিকার পরিষদ। এক পর্যায়ে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা হাতে মিছিলে হামলার চেষ্টা চালালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা তখন মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে জাপার কার্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাবাহিনী ও পুলিশের একাধিক সদস্য গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর লাঠিচার্জ করছেন।

এরইমধ্যে নুরুল হক নুরের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ একটি ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। আজ এই বোর্ড নুরের চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করতে বসবে। তবে, বোর্ডের চিকিৎসকদের নাম এখনো জানানো হয়নি।

শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, লাঠির আঘাতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নাক ও চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে।

তিনি বলেন, আহত অবস্থায় রাতে হাসপাতালে আনা হলে প্রথমে ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে দেখেন। সেখান থেকে তাকে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারে (ওসেক) রাখা হয়। পরে রাতে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, রাতেই পাঁচ বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় এবং তাদের পরামর্শে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রাতে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সকালেও মাথার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। দেখা গেছে, তার মাথার হাড় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া নাকের হাড় ও ডান চোয়ালের হাড়ও ভেঙে গেছে। মাথার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে, তবে তা অতি সামান্য। তার চোখ-মুখ ফোলা রয়েছে। চোখেও রক্ত জমে আছে। তবে শরীরের অন্যান্য স্থানে কোথাও আঘাত দেখা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *