ট্রাম্পের শুল্কনীতি অবৈধ ঘোষণা মার্কিন আদালতের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা অধিকাংশ শুল্ককে অবৈধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আপিল আদালত। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দেওয়া এক রায়ে আদালত জানায়, ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (আইইপিএ)–এর অপব্যবহার করেছে।

রায়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ট্রাম্প চাইলে এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারবেন। আপিল আদালত জানিয়েছে, আগামী ১৪ অক্টোবরের পর রায় কার্যকর হবে।

শুক্রবারের শুনানিতে অংশ নেন ১১ জন ফেডারেল বিচারক। এর মধ্যে সাতজন ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে অবৈধ বলে রায় দেন।
১২৭ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপে আদালত উল্লেখ করে,

“যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী শুল্ক আরোপ ও নীতিনির্ধারণের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে। প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার সীমিত। আইইপিএ আইনে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতেই শুল্ক আরোপ করা যায়, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প যেভাবে বিভিন্ন দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক দিয়েছেন, সেটি আইন অনুযায়ী হয়নি।”

আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, কোনো দেশের ওপর আইইপিএ প্রয়োগ করতে হলে কংগ্রেসের সুপারিশ প্রয়োজন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানেনি।

আদালতের রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, “এই রায় বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। এটি একটি বিভক্ত ও বেঠিক রায়। সব বিচারক এতে একমত নন।”

তিনি দাবি করেন, তার প্রশাসন কোনোভাবেই আইইপিএ আইনের অপব্যবহার করেনি।

ট্রাম্প বলেন, “শুল্ক প্রত্যাহার হলে তা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিকে দুর্বল করে তুলবে। তবে আমরা হাল ছাড়ব না। রায়কে আমরা সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করব, আর সেখানে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই জয়ী হবে।”

২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। একই বছরের ২ এপ্রিল তিনি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ওপর বাড়তি রপ্তানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।

শুল্ক আরোপের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ও বৈষম্য দূর করতেই তিনি এই নীতি গ্রহণ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *