জিহ্বার রঙ ও গঠন জানাচ্ছে শরীরের ভেতরের রোগের ইঙ্গিত

আমাদের জিহ্বা হয়তো শরীরের ভেতরের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক তথ্য প্রকাশ করছে—যা আমরা সচেতনভাবে খেয়ালই করি না। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও দীর্ঘায়ু বিশেষজ্ঞ ড. ভ্যাসিলি এলিওপোলোস বলেন, জিহ্বার রঙ, গঠন,

আর্দ্রতা এবং আবরণ শরীরের ভেতরে কী চলছে তার আগাম বার্তা দেয়। এসব সূক্ষ্ম পরিবর্তন পুষ্টিহীনতা, অঙ্গের ভারসাম্যহীনতা বা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জিহ্বার প্রতি মনোযোগ দেওয়া মানে রোগ আগেভাগে শনাক্ত করা এবং দীর্ঘ, সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করা।

বিভিন্ন অবস্থায় জিহ্বা যা ইঙ্গিত দেয়

স্ফীত বা ফুলে থাকা জিহ্বা
এ ধরনের জিহ্বা সাধারণত লিম্ফের জট, শরীরে তরল জমে যাওয়া কিংবা হাইপোথাইরয়েডিজমের সঙ্গে সম্পর্কিত। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক সংক্রমণও এর কারণ হতে পারে। আগাম শনাক্তের জন্য TSH, Free T3, Reverse T3 ইত্যাদি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।

উজ্জ্বল লাল জিহ্বা
শরীরে প্রদাহ বা ভিটামিন বি-১২ ও ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি নির্দেশ করে। এছাড়া স্ট্রেপ থ্রোট বা স্কারলেট ফিভারের মতো সংক্রমণের ইঙ্গিতও হতে পারে। CBC, B12, Ferritin ইত্যাদি পরীক্ষা প্রয়োজন।

সাদা আস্তরণযুক্ত বা ফ্যাকাশে জিহ্বা
হজমের সমস্যা, পাকস্থলীতে এসিডের ঘাটতি বা ছত্রাক সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা ক্যান্ডিডা ওভারগ্রোথের ইঙ্গিতও থাকতে পারে। এজন্য TIBC, মল পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ফাটা বা দাগযুক্ত জিহ্বা
এটি পানিশূন্যতা, পাকস্থলীর প্রদাহ বা ভিটামিন বি২ ও বি৩-এর ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। গভীর ও ব্যথাযুক্ত ফাটল হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

জিওগ্রাফিক টাং (প্যাচযুক্ত জিহ্বা)
যদিও এটি ক্ষতিকর নয়, তবে প্রদাহ, হিস্টামিন অসহনশীলতা, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সমস্যা বা পুষ্টিহীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। এ অবস্থায় CRP, ANA, Vitamin D, Zinc পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

চিকিৎসকের পরামর্শ

ড. ভ্যাস বলেন—“জিহ্বার পরিবর্তনকে হালকাভাবে নেবেন না। এটি ভেতরের বড় ধরনের অসামঞ্জস্যের প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে, যা সাধারণ পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। তাই অস্বাভাবিক কিছু মনে হলে গভীরভাবে পরীক্ষা করুন।”

সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *