হঠাৎ নিরাপত্তা জোরদারের তোড়জোড়, বাঙ্কার বানাচ্ছে তুরস্ক!

ইরানের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধ অনেক নিয়মই পাল্টে দিয়েছে। বদলে গেছে বহু হিসাব-নিকাশও। তুরস্কের মত বহু দেশ বুঝে গেছে, হাট গুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই আর। যা করার খুব দ্রুতই করতে হবে।

ফলে এক সতর্কবার্তা জারি করেছে তুরস্কের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি। তারা এক গবেষণায় তুরস্ককে সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছে।

সম্প্রতি ইরান ও ইসরাইলের ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর তুরস্কের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা চালিয়েছে এমআইটির সহযোগী তুর্কি জাতীয় গোয়েন্দা একাডেমী। এই গবেষণার শিরোনাম দেয়া হয়েছে “১২ দিনের যুদ্ধ: তুরস্কের জন্য শিক্ষা”। এতে ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে তুরস্কের জন্য কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করা হয়েছে। তাই তুরস্ককে এই ঝুঁকিগুলো কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া অপরিহার্য বলেও ওই গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরাইলের যুদ্ধ থেকে তুরস্কের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ, যে কোনো যুদ্ধে শক্তিশালী সামরিক জোটের গুরুত্ব অনেক। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল তার শক্তিশালী পশ্চিমা জোট থেকে অস্ত্র সহযোগিতা, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং লজিস্টিক সহায়তা পেয়েছিল। কিন্তু ইরান তার অন্যতম মিত্র রাশিয়া ও চীনের কাছ থেকে কেবল মৌখিক সমর্থন পেয়েছে। এর অর্থ হলো, ব্রিক্সের মত কোন সদস্য রাষ্ট্র আক্রমণের শিকার হলে তাদের সাহায্য করার মত কেউই নেই।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, ইসরাইলের আগাম সতর্কতা সাইরেন ব্যবস্থা এবং আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যাপক নেটওয়ার্কের কারণে তাদের প্রাণহানি কম হয়েছে। তাই কখনো যুদ্ধ শুরু হলে তুরস্কেরও একইভাবে আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করা এবং বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে সহজে প্রবেশযোগ্য আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা উচিত।

এছাড়া গবেষণায় তুরস্ককে যেকোনো সম্ভাব্য বিদেশী সংঘাত মোকাবেলায় সক্ষম সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে এবং প্রযুক্তিগত অবকাঠামো ও কৌশলগত পরিকল্পনা পুনরায় মূল্যায়নের উপর জোর দেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও তুরস্ককে আরো কিছু সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো:

ইরান ও ইসরাইলের আবারো যুদ্ধ শুরু হলে তেহরানের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য কমে যেতে পারে।

ইরান থেকে লাখ লাখ শরণার্থী তুরস্কে প্রবেশ করতে পারে — এক্ষেত্রে সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

আবারো যুদ্ধ হলে তুরস্কের আশেপাশের অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।

এমনকি রাশিয়া ও চীন যদি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে।

গবেষণা অনুযায়ী, এমনটি হলে তুরস্কের জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হবে। কারণ, তুরস্কের সীমান্ত বরাবর একটি নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হবে। তাই এটি দ্রুত পূরণ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *