পূর্ণ স্বাধীনতা পাচ্ছে ফি’লিস্তিন!

গাজায় যুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক আহ্বান বারবার উপেক্ষা করেও এবার বড় চাপের মুখে পড়েছে দখলদার ইসরাইল। যুদ্ধবিরতির আহ্বান অগ্রাহ্য করে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ায় একে একে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পশ্চিমা মিত্ররাও।

এবার ইসরাইলের জন্য এক মহা ধাক্কা হয়ে এসেছে ফ্রান্সের নেতৃত্বে গঠিত ১৫ দেশের এক ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র। এই যৌথ বিবৃতিতে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, মালটা, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, সান মারিনো, স্পেন ও অ্যান্ডোরা—এই ১৫ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার রাতে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রতি তাদের “অটল প্রতিশ্রুতি” পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়েছে—আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দুটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ইসরাইল ও ফিলিস্তিন গঠনের ওপর। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে গাজা ও পশ্চিমতীরকে একীভূত করাও জরুরি।

তাদের মতে, কেবলমাত্র দুটি আলাদা দেশের উপস্থিতিতেই গাজার রক্তপাত থামানো সম্ভব। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোকেও আহ্বান জানানো হয়েছে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।

এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—ইসরাইল গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না করলে যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে।

এর আগেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তার দেশ শিগগিরই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে, যদিও তখন তীব্র বিরোধিতা করেছিল আমেরিকা ও ইসরাইল।

কিন্তু এত কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকার পরও ফ্রান্সকে থামানো যায়নি। বরং তারা আরও ১৪টি দেশকে পাশে নিয়ে সরাসরি ইসরাইলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪২টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আরও কয়েকটি প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশ এখনো সেই স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের সরাসরি অবস্থান বদলের ফলে ইসরাইলের উপর থেকে কূটনৈতিক নিয়ন্ত্রণ দ্রুত সরে যাচ্ছে। গাজার অমানবিক পরিস্থিতি ও ইসরাইলের আগ্রাসী নীতির জবাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে এখন এক অভূতপূর্ব ঐক্যের চিত্র ফুটে উঠেছে, যা ইসরাইলের জন্য এক বিরাট কূটনৈতিক পরাজয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *