
ভারত-বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক ঘিরে ফের উত্তাপ ছড়াল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। কলকাতার নিউ টাউনের একটি আবাসন প্রকল্প উদ্বোধনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে একহাত
নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বর্তমানে কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছেন এবং তা নাকি ভারত সরকারের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে।
মমতা বলেন, “আমি তো কিছু বলিনি। ভারত সরকারি অতিথি হিসেবে কয়েকজনকে রেখেছে। পার্শ্ববর্তী দেশে সমস্যা হয়েছে বলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এটাও একটা রাজনৈতিক কারণ।” তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে ইঙ্গিত স্পষ্ট—বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটের সময় ভারত বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছে একটি “নিরাপদ আশ্রয়স্থল”।
তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি হয়ে যাবে? এটা কেমন কথা! ভাষার টান বা উচ্চারণের ভিন্নতা থাকতেই পারে। ওপার বাংলার টান আলাদা হওয়া স্বাভাবিক। তাই বলে বিদেশি তকমা দেওয়া যাবে না।”
বক্তব্যে আরও বিস্ফোরক হয়ে মমতা বলেন, বিজেপি নেতারা বলছেন, ভারতে ১৭ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে এবং তাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এর প্রেক্ষিতে মমতার জিজ্ঞাসা, “কে হে তুমি হরিদাস পাল?” তিনি জাতিসংঘের তথ্য উদ্ধৃত করে জানান, ভারতে রোহিঙ্গার সংখ্যা মাত্র ২ হাজারের মতো, যাদের অনেকে জম্মু-কাশ্মীরে ক্যাম্পে আছেন। অথচ রোহিঙ্গা আর বাঙালিদের ইচ্ছাকৃতভাবে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে।
মমতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলায় কথা বললেই এখন রিপোর্ট করতে হবে! এটাই কি এখনকার নিয়ম? “বাংলা বলা কি অপরাধ? বাংলা ভাষায় কথা বললেই সে বাংলাদেশি?”— এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, বাংলা ভাষার অপমান বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, যারা পশ্চিমবঙ্গে ভোট দিয়েছে, তারা তো ভারতের নাগরিক—তাদের ধর্ম, কাস্ট বা রাজ্য দেখে অধিকার ছেঁটে ফেলা যাবে না। “নাম কাটার নামে বাংলা ভাষীদের হেনস্থা মেনে নেব না,”— সাফ জানিয়ে দেন মমতা।
সূত্র: https://youtu.be/dSHjexK5aRw?si=s9OCHbcbgdGNim0C