ভারতে মন্দির চত্বরে গণকবরের অভিযোগে তোলপাড়

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বিখ্যাত ধর্মস্থল ধর্মস্থালা মন্দির চত্বরে গণকবরের অভিযোগ ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। মন্দিরের চত্বরে শতাধিক মরদেহ মাটিচাপা দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে

আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এক সাবেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তার দাবি, দুই দশক ধরে প্রভাবশালীদের যৌন নির্যাতন ও হত্যার শিকার নারী-শিশুদের মৃতদেহ তিনি গোপনে কবর দিতে বাধ্য হন। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি কঙ্কালও উদ্ধার করা হয়েছে।

ধর্মস্থালার আলোচিত ভগবান মঞ্জুনাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সূত্রপাত গত ৩ জুলাই। ওইদিন একজন দলিত ব্যক্তি, যিনি নিজেকে মন্দিরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন বলে দাবি করেন,

পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে তিনি শতাধিক মরদেহ মন্দির চত্বরে পুঁতে রাখেন। অনেক মরদেহেই ছিল বর্বর নির্যাতনের চিহ্ন।

অভিযোগকারী বর্তমানে আদালতে জবানবন্দি দিলেও তার পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। তার দাবি, ২০১৪ সালে পরিবারসহ ধর্মস্থালা ছেড়ে পালিয়ে যান এবং এখন অপরাধবোধ থেকেই সত্য প্রকাশ করছেন।

ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। সাবেক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জবানবন্দির পর, ২০০৩ সালে ধর্মস্থালায় নিখোঁজ হওয়া এক শিক্ষার্থীর পরিবারও নতুন করে বিচার দাবি জানিয়েছে।

এ ঘটনায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক সরকার ইতিমধ্যে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি ও স্বচ্ছতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিশিষ্ট আইপিএস কর্মকর্তার নেতৃত্বে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

এদিকে, মামলাটি স্পর্শকাতর উল্লেখ করে বেঙ্গালুরুর একটি আদালত ধর্মস্থালা সংক্রান্ত ৮,৮০০-এর বেশি অনলাইন পোস্ট মুছে ফেলতে ফেসবুক ও ইউটিউবকে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি সংবাদ প্রচারেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যা নিয়ে ভারতের বিভিন্ন মহলে উঠেছে নিন্দার ঝড়। এরই মধ্যে আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে একটি ইউটিউব চ্যানেল।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মস্থালার ৮০০ বছরের ঐতিহ্য ও আস্থা এখন প্রশ্নের মুখে। তবে মন্দির কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত চায় এবং সত্য উদ্ঘাটনের পক্ষে রয়েছে।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=9U-vhuZXNcM

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *