পরমাণু হামলা হলে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেভাবে থাকতে পারেন সুরক্ষিত!

বিশ্ব যখন ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে, তখন বড় কোনো দুর্যোগের মুহূর্তে কোথায় আশ্রয় নিলে বাঁচার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি—তা জানা সত্যিই জরুরি। বিশেষ করে নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের মতো চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে জীবন ও মৃত্যুর ব্যবধান নির্ধারিত হতে পারে সঠিক আশ্রয়ের ওপর।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরমাণু বিস্ফোরণের মতো বিপর্যয়ে কী করবেন, কোথায় আশ্রয় নেবেন—সে সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকলে অনেক প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত দিক, যা নিউক্লিয়ার হামলার সময় আপনাকে বাঁচাতে পারে।

বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই চরম বিপদ

নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের সময় তীব্র এক শকওয়েভ সৃষ্টি হয়, যা চোখের পলকে ধ্বংস করে দেয় ভবন, যানবাহন ও মানবসভ্যতা। এই বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী যে কাছাকাছি অবস্থানে থাকা কেউ বাইরে থাকলে তার বাঁচার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। এমনকি বাড়ির ভেতরেও যদি ভুল জায়গায় থাকেন, তবু বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন।

কোথায় আশ্রয় নেবেন, কোথা থেকে দূরে থাকবেন

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়ির বা ভবনের ভেতরে থাকলেও কিছু জায়গা একেবারেই নিরাপদ নয়। বিস্ফোরণের সময় জানালার কাচ ভেঙে তীব্র গতিতে শরীরে আঘাত হানতে পারে। তাই জানালার কাছ থেকে যত দূরে থাকা যায়, তত ভালো। একইভাবে লম্বা করিডোর বা ফাঁকা জায়গা যেখানে ধ্বংসাবশেষ তীব্র গতিতে ছুটে যেতে পারে, সেগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ।

সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা: বাড়ির বা ভবনের সবচেয়ে ভেতরের অংশে অবস্থান করা, বিশেষ করে এমন কোনো কক্ষে যেটিতে বাইরের দিকে কোনো জানালা নেই। বেসমেন্ট বা ভূগর্ভস্থ কক্ষ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ। কংক্রিট বা রিইনফোর্সড সিমেন্টের দেয়ালবিশিষ্ট কক্ষগুলো কাঠ বা কাচের তৈরি জায়গার চেয়ে অনেক বেশি সুরক্ষা দিতে পারে।

বিস্ফোরণের পরও সতর্ক থাকতে হবে

বিস্ফোরণ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বিপদ শেষ হয় না। এর পর শুরু হয় আগুন, ভবনের ধস ও সবচেয়ে বিপজ্জনক—রেডিওঅ্যাকটিভ বিকিরণ বা বিকিরণজাত ধুলাবালির ভয়াল থাবা। এগুলো বাতাসে মিশে কাছাকাছি এলাকা চুপিসারে দূষিত করে তোলে এবং দীর্ঘমেয়াদে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।

এই কারণে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বিস্ফোরণের পর যতক্ষণ সম্ভব ঘরের ভেতরেই অবস্থান করুন। জানালাগুলো বন্ধ করে দিন, দরজার ফাঁকেও কাপড় বা পলিথিন লাগিয়ে বাইরে থেকে বাতাস আসা বন্ধ করুন। চেষ্টা করুন এমন জায়গায় থাকার, যেটি কিছুটা বায়ুরোধী।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

ঘরের এমন জায়গায় থাকুন, যেখানে চারপাশ ঘন দেয়াল দিয়ে আবৃত।
বাইরে থাকলে মুখ ঢেকে ফেলুন এবং দ্রুত কাছাকাছি কোনো ভবনে আশ্রয় নিন।
আশ্রয়ে পৌঁছানোর পর কোনো সরকারি বা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে বিপদ কেটে গেছে এমন ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত বাইরে বের হবেন না।
নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের মতো পরিস্থিতি হয়তো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অচিন্তনীয়। তবে এই ধরণের দুর্যোগে কী করবেন, কোথায় যাবেন, কোন ভুলগুলো করবেন না—তা আগে থেকে জানা থাকলে বিপদের মুহূর্তে বাঁচার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়।

নোট: এই প্রতিবেদনটি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য, কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে চিকিৎসা বা জরুরি সহায়তার জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।

সূত্র: https://3dvf.com/en/in-the-event-of-a-nuclear-explosion-here-are-the-safest-places-to-take-shelter/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *