ইরানি জেনারেলকে হুমকি: “১২ ঘণ্টার মধ্যে পালাও, নইলে…

এক অডিও ফাঁসের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার হুমকি—“তোমার কাছে ১২ ঘণ্টা সময় আছে। পরিবারসহ পালাও, নইলে মরে যাবে।” এই হুমকি দেওয়া হয় একজন শীর্ষ ইরানি রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) জেনারেলকে। ফোনালাপটি ছিল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর অংশ, যা শুরু হয় ১৩ জুন থেকে। অভিযানের শুরুতেই ইসরায়েল ঘায়েল করে ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক ঘাঁটিগুলোতে।

ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, অন্তত ২০ জন ইরানি শীর্ষ ও মাঝারি স্তরের কর্মকর্তাকে ফোন করে এই হুমকি দেওয়া হয়। অডিওতে এজেন্টকে বলতে শোনা যায়—”আমরা এখনই তোমার ঘাড়ের শিরার চেয়েও কাছে। এই কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নাও।”

আরও ভয়াবহ এক বক্তব্যে সে বলে, “আমি এমন একটি দেশ থেকে ফোন করছি যেটা মাত্র দুই ঘণ্টা আগে সালামি, বাঘেরি, শামখানিকে একে একে নরকে পাঠিয়েছে। তুমি কি তাদের মত হতে চাও?”

ফাঁস হওয়া অডিওতে ইরানি জেনারেল প্রশ্ন করেন, “তাহলে আমি কী করবো?” উত্তরে এজেন্ট বলেন, “তুমি এখনই ভিডিও করো, যেখানে তুমি ইরানের শাসনব্যবস্থাকে নিন্দা করছো। তারপর সেটা টেলিগ্রামে পাঠিয়ে দাও।” তবে সেই ভিডিও আদৌ তৈরি হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।

এই মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্য ছিল ইরানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতৃত্বকে ভয় দেখানো, যেন তারা নিহত নেতাদের স্থলাভিষিক্ত হতে না চায়। শুধু ফোন কলই নয়, ইসরায়েলি এজেন্টরা ঘরে নোট পাঠিয়ে, স্ত্রীদের মাধ্যমে বার্তা দিয়েও সতর্ক করেছে টার্গেটদের।

অভিযান ‘রাইজিং লায়ন’ কেবল হুমকিতেই থেমে থাকেনি। একইসাথে ইরানে গোপনে থাকা ইসরায়েলি স্লিপার টিম, অস্ত্র মজুত কেন্দ্র এবং গুপ্তচর নেটওয়ার্ক সক্রিয় হয়ে ওঠে। পরে যুক্তরাষ্ট্রও যুদ্ধে যোগ দেয়—প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান ও টমাহক মিসাইল দিয়ে ইরানের তিনটি ইউরেনিয়াম স্থাপনায় হামলা চালানো হয়।

ইরানও চুপ করে থাকেনি। পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি ‘আল-উদেইদ এয়ারবেইস’-এ ড্রোন হামলা চালায়। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটিগুলোর মধ্যে এটি একটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *