
‘মেঘ যতটা গর্জে, ততটা বর্ষে না’ বাংলা ভাষার বিখ্যাত সেই প্রবাদের সাথে এখন যেনো মিলে যায় কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কথা। বারবার ইরানকে ধমকানো নেতানিয়াহু বোধহয় ভুলে গিয়েছিলো ইরান ফিলিস্তিনের মত সেনাবাহিনী হীন নিরস্ত্র কোন রাষ্ট্রু নয়। কাপুরুষের মত নেতানিয়াহুর বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজায় নিরস্ত্র মুসলমানদের ওপর দীর্ঘ দুই বছর ধরে চালাচ্ছে আগ্রাসন। যাতে হত্যা করেছে ৬০ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিকদের। প্রকৃতি নাকি এক সময় কৃতকর্মের ফল ফিরিয়ে দেয়, ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতন আর হত্যাকন্ডের ফল এখন যেনো ইরান কড়া গন্ডায় ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের দিকে।
সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েল নজিরবিহীন হামলা চালায় দেশটিতে। এরপরই মূলত পাল্টা মিসাইল হামলা চালাতে থাকে ইরান। আধুনিক সব মিসাইল হামলায় এখন ঠিক গাজার প্রতিচ্ছবিই দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলে। রাজধানী তেল আবিবসহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে বাট ইয়াম, পেতাহ টিকভা, রামাত গান, হাইফা সহ বড় শহরগুলো। ইরানের মুহুর্মুহু এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে। আর আহতের সংখ্যা এক হাজারের বেশি বলেও দাবি করা হচ্ছে। তবে, নির্ভরযোগ্য কিছু সূত্র বলছে নিহতের এই সংখ্যা কোনভাবেই ৫০০ এর কম নয়। আর আহতের সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেছে ৪ হজারের বেশি।
নেতানিয়াহু এখন যেনো শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় মত্ত। গাজায় চালানো ইসরায়েলি আগ্রাসনে মাঝেমধ্যেই গর্জে উঠতে দেখা যেতো স্বয়ং ইসরায়েলিদেরও এরপর কখনো মুসলমানদের গণহত্যা করা থামননি এই নরপিশাচ। শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউই রেহায় পায়নি ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে। মুহুর্মুহু ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়ে গাজাকে ধ্বংস স্তুপে পরিণত করা নেতানিয়াহু এবার বাঁচতে ভিক্ষার থালা হাতে নিয়েছে। যুদ্ধ থামানোর জন্য রীতিমতো এখন কান্নাকাটি করছে নেতানিয়াহু। তার পরম মিত্র আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পায়ে ধরে ভিক্ষা চাইছেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। কিন্তু, ইসরায়েলে হামলা অব্যহত রাখা ইরান নেতানিয়াহুকে যেনো উচিৎ শিক্ষা না দিয়ে ছাড়বে না কোনভাবেই।
এদিকে গাজার অসহায় নিরীহ মুসলমানদের ওপর নেতানিয়াহুর সেই বর্বরতা সম্প্রতি ছাড়িয়ে যায় অতীতের সকল রেকর্ড। পবিত্র রমজান মাসেও যেভাবে পাখির মত গোলাবর্ষণ করে মেরেছিলো সাধারণ বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিকদের। তাতে করে এখন নিজ দেশের নাগরিকদের ওপর ইরানের হামলা যেনো প্রত্যাশিতই ছিলো। মুখে বড় বড় কথার ফুলঝুরি আর হুংকার দিলেও কার্যত সে এখন বিড়ালে পরিণত হয়েছে।
ইরানের এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় রাজধানী তেল আবিব, বাট ইয়াম, পেতাহ টিকভা, রামাত গান, হাইফা সহ বড় শহরগুলোতে বহু আবাসন ধ্বংস হয়েছে। আর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা। রীতিমতো এখন হাসপাতালের নিচে গিয়ে ঠাঁই নিতে হচ্ছে ইসরায়েলিদের। যা মনে করিয়ে দেয় গাজার সেই অসহায় মুসলমানদের হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়ার কথা। হাসপাতালে ঠাঁই নিয়েও সেদিন ইসরায়েলের মিসাইলের আঘাত থেকে বাঁচতে পারেনি ফিলিস্তিনিরা।