
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বিল ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস হওয়ায় বিশ্বজুড়ে রেমিটেন্স প্রবাহে বড় ধাক্কার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ভারত, যেটি বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স গ্রহণকারী দেশ।
এই বিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর ওপর ৩.৫% কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে এই হার ৫% ছিল, কিন্তু সমালোচনার মুখে তা কমিয়ে আনা হয়। বিলটি ২২ মে মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ২১৫-২১৪ ভোটে অল্প ব্যবধানে পাস হয়।
বিশ্বব্যাংক ও ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত প্রায় ১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে।সবচেয়ে বড় অংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয়দের কাছ থেকে।
এই নতুন করভার ভারতীয় অভিবাসী পরিবারগুলোর জন্য কঠিন বাস্তবতা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে কেরালা, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মতো রাজ্যগুলোতে যেখানে বিদেশি আয় প্রধান ভরসা।
১৯৯০ সালে ভারতের আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংখ্যা ছিল ৬.৬ মিলিয়ন। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮.৫ মিলিয়নে। যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয়দের মধ্যে প্রায় ৭৮ শতাংশই উচ্চ আয়ের পেশায় নিযুক্ত, যেমন: তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনীতি ও প্রকৌশল। ফলে তাদের পাঠানো রেমিটেন্স ভারতের মোট রেমিটেন্সের প্রায় ২৮ শতাংশ
বিশ্ব বাণিজ্য গবেষণা সংস্থা (GTRI) বলছে, “এই কর বিল ভারতকে প্রতিবছর বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা হারাতে বাধ্য করতে পারে।”
এই বিলে কঠোর সমালোচনা করেছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও গভীর হয়েছে।
বিলে আর কী আছে?
এই বিলে আরও কিছু বিতর্কিত প্রস্তাব রয়েছে, যেমন: বার্ষিক ১,৬০,০০০ ডলারের কম আয়ের ব্যক্তিদের জন্য অতিরিক্ত কাজের আয় ও টিপসের ওপর কর প্রত্যাহার। নবজাতকের জন্য ‘ট্রাম্প সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ – যেখানে ১,০০০ ডলার প্রাথমিক জমা এবং বছরে ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত জমা রাখা যাবে। গ্রীন এনার্জি কর ক্রেডিট ও শিক্ষাঋণ প্রোগ্রামের বাজেট হ্রাস। গানের সাইলেন্সার ও ইনডোর ট্যানিং সার্ভিসে কর বাতিল। এসএএলটি (SALT) কর ছাড়ের সীমা ১০,০০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০,০০০ ডলার করা হয়েছে কিছু শ্রেণির ফাইলারদের জন্য।
এই বিল এখন সিনেটের সামনে রয়েছে, যেখানে এটি আরও প্রতিক্রিয়া ও পরিবর্তনের সম্মুখীন হতে পারে।