বড় ধাক্কা খেল ভারত!

সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা বিশ্বের যেকোনও দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। এরই মধ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাকি ২৫ শতাংশ শুল্ক (রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে) আরোপ করা হবে কি না, তা নির্ভর করছে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।

এজন্য আলোচনায় বসতে ভারত সফরের কথা ছিল মার্কিন প্রতিনিধি দলের। এ বিষয়ে গত ৮ আগস্ট ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ প্রথম জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দল ভারতের উদ্দেশে রওনা দেবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ তাদের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বার্তা আসেনি।

রবিবার সংবাদমাধ্যমটি নিশ্চিত করেছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের নির্ধারিত ওই সফর আপাতত হচ্ছে না। অন্যদিকে, ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের নির্ধারিত ওই সফর বাতিল করা হয়েছে।

ভারতের ব্যবসায়িক ও আর্থিক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি প্রফিট শনিবার জানিয়েছে, আগামী থেকে ২৫-২৯ আগস্ট মার্কিন বাণিজ্য আলোচকদের নয়াদিল্লি সফর করার কথা ছিল। তবে তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা বিলম্বিত হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য এই আলোচনা পিছিয়ে অন্য তারিখে নির্ধারণ করা হতে পারে। এতে ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের জন্য ২৭ আগস্টের সময়সীমা শুরু হওয়ার আগে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার আশা ম্লান হয়ে গেছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে চায়। কিন্তু ভারত সরকার নিজেদের কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষায় তাতে রাজি হচ্ছে না। এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও তাতে কোনও ফল মেলেনি।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, কৃষক, জেলে এবং পশুপালকদের কল্যাণে কোনও আপস করবে না ভারত। মার্কিন কৃষি ও দুগ্ধপণ্যের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ভারতের ওপর শুল্ক শিথিল হবে নাকি এর পরিমাণ আরও বাড়বে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। কারণ ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক থেকেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আসেনি। তবে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেছেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সতর্ক করেছেন, যদি ‘ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা ভালোভাবে না এগোয়’ অর্থাৎ ব্যর্থ হয়, তাহলে ভারতের ওপর আরোপিত দ্বিতীয় পর্যায়ের শুল্ক বাড়তে পারে।

ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা সবাই প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিয়ে হতাশ। আশা করেছিলাম, তিনি আলোচনায় আরও গুরুত্ব দেবেন। মনে হচ্ছে, তিনি এখন আলোচনা করতে প্রস্তুত।

আর ভারত রুশ তেল কিনছে বলে তাদের ওপর আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের শুল্ক আরোপ করেছি। যদি বিষয়গুলো ভালোভাবে না এগোয়, তবে নিষেধাজ্ঞা বা এই শুল্ক আরও বাড়তে পারে। সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *