মাকে হত্যার হুমকি ছেলের, আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মা

নিজের ছেলের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন এক মা। অভিযোগ, সম্পত্তির জন্য তাকে নিয়মিত মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে বড় ছেলে। এমনকি তিনি হত্যার হুমকিও পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই মা বলেন, “এটা যে কত বড় কঠিন একটা মা শুধু বলতে পারে। কোন পর্যায়ে গেলে একটা মা তার সন্তানের বিরুদ্ধে এভাবে কোর্টে আসে, সেটা কেবল সেই মা-ই বুঝতে পারে।”

তিনি জানান, তার ছেলে লন্ডনে থাকতেন। সেখানে সেটেল হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এদিকে, তার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বামীর ইচ্ছা ছিল সন্তানকে কাছে পাওয়ার। “আমার স্বামী বারবার ছেলেকে বলতো তুমি চলে আসো, তোমার থাকা দরকার। ছেলে দেশে আসার পর কী শুনলো, কী জানলো জানি না, কিন্তু তখন থেকেই সে আমাকে নানাভাবে মানসিক আর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে,” বলেন তিনি।

ওই মা আরও জানান,”স্বামী বেঁচে থাকতেই অত্যাচার শুরু হয়। এরপর স্বামীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে এবং একসময় উনি মারা যান। তারপর ছেলে আমার কাছে প্রপার্টির দখল দাবি করে। আমি বললাম আইন অনুযায়ী, শরীয়াহ অনুযায়ী তুমি অবশ্যই পাবে। শুধু তুমি না, সব ভাইবোনই পাবে। কিন্তু এই মুহূর্তে নয়। এখন আমার যা আছে, সেটা আমার কাছেই থাকবে।”

কিন্তু ছেলের জবাব ছিল আক্রমণাত্মক ও অমানবিক। মা বলেন, “সে তখন বলল— আপনি যদি ২০ বছর বাঁচেন, তাহলে আমি ২০ বছর না পেয়ে থাকব? আমি বললাম— আল্লাহ যদি ২০ বছর হায়াত দেয়, তাহলে তাই হবে। তখন সে বলল— আপনি রানীর মতো থাকবেন? আমি বললাম— আল্লাহ যদি রানীর মতো রাখে, তাহলে থাকব।”

তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিদিন কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে ছেলে তাকে মানসিকভাবে টর্চার করে।
“সারাক্ষণ ভিডিও করে, অকথ্য ভাষায় কথা বলে। আমার কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করতে দেয় না, তাদের ভয়ভীতি দেখায়। দু’দিনেই তারা চাকরি ছেড়ে চলে যায়। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি আমাকে খুনের হুমকিও দিয়েছে। বলেছে রেগে গেলে আমাকে মেরে ফেলবে, কেটে ফেলবে।”

চোখের পানি মুছতে মুছতে এই মা বলেন, “এভাবে আমি সবসময় আতঙ্কে থাকি। ভয় লাগে কখন কী হয়ে যায়। এখন আমি নিরুপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমি চাই, যেন আমাকে কোনো বিপদ না ঘটে, আমার সন্তানদেরও যেন কোনো ক্ষতি না হয়। আইন যেন আমাকে সুরক্ষা দেয়।”
বর্তমানে তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং নিজেকে ও তার অন্য সন্তানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *