
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দশম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন রাব্বি হোসেন। তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চাঁনখারপুলে পুলিশের নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী।
জবানবন্দিতে তিনি ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্য দেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে রাব্বি তার জবানবন্দি ও জেরা পেশ করেন।
জবানবন্দিতে রাব্বি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সকাল ৮টার দিকে আমরা চাঁনখারপুল এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেই। আমার সঙ্গে আনাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌরভ, মুজাহিদসহ অনেকে ছিলেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টিএসসির দিকে যাওয়ার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে আমরা পুলিশের বাধার সম্মুখীন হই। আমাদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়তে থাকে পুলিশ।
প্রাণ বাঁচাতে আমরা নবাব কাটারা গলির মুখে আশ্রয় নেই। ওই সময় পুলিশের গুলিতে অনেকেই আহত হন। আমার কপালেও গুলি লাগে। তিনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে আরও মারমুখী হতে থাকে পুলিশ। আমার পাশের একজনের হাতে গুলি লাগে।
আমরা গুলি বের করার চেষ্টা করি। একই সঙ্গে ঘটনার দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করি। ঠিক তখনই নবাব কাটারা গলির মুখে আনাসকে টার্গেট করে গুলি চালান একজন পুলিশ সদস্য। আমি সরাসরি তাকে গুলি করার দৃশ্য দেখতে পাই।
এরপর আমরা আনাসকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার কপালে ছররা গুলি লাগার কারণে কিছুদূর যাওয়ার পর মাথা ঘুরে পড়ে যাই। তখন আনাসকে নিয়ে হাসপাতালে যান সৌরভ। পরে জানতে পারি আনাস শহীদ হয়েছেন।
এরপর তার বাসায় গিয়ে মা-বাবার কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেই। এছাড়াও আনাসকে গুলি করার ও হাসপাতালে নেওয়ার দৃশ্য আমি মোবাইলে ধারণ করি। সেই দৃশ্যও তাদের দেখানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী এই সাক্ষী বলেন, সেদিন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, হাবিবুর রহমান, সুদীপ কুমার চক্রবর্তীদের নির্দেশে কনস্টেবল সুজন, ইমাজ, নাসিরুলসহ অন্যরা গুলি করেছিলেন। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন মাধ্যমসহ কিছু ভিডিও দেখে তাদের নাম জেনেছি। আমি এসব আসামির ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।