
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও প্রকল্প থেকে চাকরি হারিয়ে আন্দোলন করেছেন শিক্ষকরা। এ সময় তাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। চাকরি ফেরত চেয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আটক ২৮ শিক্ষককে অবশেষে ছেড়ে দিয়েছে
পুলিশ। আজ বুধবার বিকেল ৪টার দিকে উখিয়া থানা থেকে একে একে ছাড়া পান আটক ২৮ শিক্ষককে। পুলিশের সঙ্গে সর্বদলীয় রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠকের পর হামলার ঘটনাটি তদন্ত ও চাকরি হারানো শিক্ষকদের পুনর্বাসনসহ ৫ দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে আজ সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া উপজেলা সদর স্টেশনের ফলিয়াপাড়া রাস্তার মোড় এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষকদের কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
পরে ঘটনাস্থল থেকে জুলাই আন্দোলনের ছাত্রপ্রতিনিধি জিনিয়া শারমিন রিয়াসহ ২৮ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ঘটনার পর উখিয়া থানা প্রাঙ্গণ ঘিরে রাখে আন্দোলনকারীরা।
একপর্যায়ে গেট ভেঙে থানার ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। খবর পেয়ে থানা প্রাঙ্গণে যান বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
সেখানে ঘটনাটি সমাধানে দীর্ঘ বৈঠকের পর সর্বদলীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। পরে বৈঠকের সিদ্ধান্তে পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলনকারীদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় আটকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৫টি দাবির বিষয় সামনে এসেছে। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন এবং আটকের ঘটনায় জড়িতদের তদন্তপূর্বক
বিচার করতে হবে। গঠিত কমিটির সদস্যরা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ করবেন। আগামী ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কক্সবাজার সফরে শিক্ষকের চাকরি ব্যাপারে কমিটির বৈঠক করবে ও কথা বলবে।
আজকের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উখিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ আরিফ হোছাইনসহ জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এর আগে একই দাবিতে গত সোমবার সকাল থেকে ১০ ঘণ্টা উখিয়ার কোর্টবাজার স্টেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা। এতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে কয়েক হাজার যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট তৈরি হয়।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন গত ৩ জুন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে (আরআরআরসি) লেখা এক চিঠিতে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত সব শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। এর আগেই চাকরি হারান ১ হাজার ২৫০ আন্দোলনকারী শিক্ষক।