
৮৯ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমালেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়ক ও কোচ বব সিম্পসন। অ্যালান বোর্ডার ও মার্ক টেইলরের অধিনায়কত্বের সময় তার কোচিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ১৯৮০ ও ৯০ দশকে বিশ্ব ক্রিকেটে আধিপত্য পুনরুদ্ধার করে। খেলোয়াড়ি জীবনের পর কোচ হিসেবেও সিম্পসনের ভূমিকা ছিল অনবদ্য।
তার প্রয়াণ নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) চেয়ারম্যান মাইক বেয়ার্ড শোক জানিয়ে বলেন, ‘বব সিম্পসন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের মহারথীদের একজন। তাকে খেলতে দেখা বা তার জ্ঞানের সুফল ভোগ করা যেকোনো মানুষের জন্য আজকের এই দিনটি নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক।’ আইসিসির মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি ‘হল অব ফেমে’ জায়গা পাওয়া সিম্পসন প্রথম পূর্ণ মেয়াদে কোচ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুম সামলেছেন।
১৯৫৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক হওয়া সিম্পসন ৬২ টেস্ট ম্যাচে ৪৮৬৯ রান করেন, যেখানে তার গড় ছিল ৪৬.৮১। করেছেন ১০টি সেঞ্চুরি ও ২৭টি হাফসেঞ্চুরি। শুরুতে অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি পেলেও সিম্পসন ১৯৬০–এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার নির্ভরযোগ্য ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৬৪ সালে এক মৌসুমে তিনি ১৩৮১ রান করেন, যা ছিল ওই সময়ের রেকর্ড। ওই বছরই ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস ৩১১ রান। পরবর্তী দুই বছরে আরও কয়েকটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান।
সিম্পসন ও বিল লরির জুটি ছিল প্রতিপক্ষ দল ও বোলারদের জন্য আতঙ্কের। দু’জন মিলে ৬২ ইনিংসে ৩৫৯৬ রান করেন, যা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল। এরপর এখন পর্যন্ত মাত্র ছয় জুটি তাদের ছাড়িয়ে গেছে। লেগস্পিনার হিসেবেও কার্যকর ছিলেন সিম্পসন। টেস্টে তার ঝুলিতে রয়েছে ৭১ উইকেট, এর মধ্যে নেন দুটি ফাইফার। ১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্টে তুলে নেন ক্যারিয়ারে ৮ উইকেটের সেরা বোলিং ফিগার। একই ম্যাচেই পাঁচ উইকেটের কীর্তিও গড়েন।
প্রথমবার অবসরের পর অবশ্য ১৯৭৭ সালে ৪১ বছর বয়সে আবারও ক্রিকেটে ফেরেন সিম্পসন। সে সময় অনেক অস্ট্রেলিয়ান তারকা খেলোয়াড় ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটে যোগ দেওয়ায় সিম্পসনকে আবারও নেতৃত্ব নিতে হয়। ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি, এরপর পুরোদমে বিদায় নেন ক্রিকেট থেকে।