
প্রতিদিন আমরা অজান্তেই এমন কিছু ভুল করে থাকি, যা আমাদের হৃদপিণ্ডের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এমন একটি ছোট কিন্তু বিপজ্জনক অভ্যাস হলো:
মানসিক চাপ বা স্ট্রেসকে অবহেলা করা।
কীভাবে স্ট্রেস হার্টের ক্ষতি করে?
অনেকেই মনে করেন, মানসিক চাপ শুধু মনের ওপর প্রভাব ফেলে, কিন্তু এটি ভুল ধারণা। যখন আমরা স্ট্রেসে থাকি, তখন আমাদের শরীর ‘কর্টিসল’ এবং ‘অ্যাড্রেনালিন’ হরমোন নিঃসরণ করে। এই হরমোনগুলো আমাদের হৃদপিণ্ডের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে:
১. রক্তচাপ বৃদ্ধি: স্ট্রেসের কারণে রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিণ্ডের পেশীগুলোকে দুর্বল করে দেয় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
২. হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি: অ্যাড্রেনালিন হরমোন হৃদস্পন্দন দ্রুত করে দেয়, যা হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে। এতে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (Arrhythmia) এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
৩. রক্তে শর্করা ও চর্বির মাত্রা বৃদ্ধি: অতিরিক্ত স্ট্রেস আমাদের শরীরে গ্লুকোজ ও ফ্যাটি অ্যাসিডের নিঃসরণ বাড়ায়। এই উপাদানগুলো রক্তে অতিরিক্ত চর্বি জমায়, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
সমাধান কী?
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে প্রতিদিনের স্ট্রেসকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। কিছু সহজ অভ্যাস আপনার স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করতে পারে:
মাইন্ডফুলনেস বা ধ্যান: প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট মেডিটেশন বা মাইন্ডফুলনেস অনুশীলন করলে মানসিক চাপ অনেক কমে আসে।
নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটা বা জগিং করলে মন শান্ত থাকে এবং স্ট্রেস হরমোন কমে যায়।
পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুম আমাদের শরীর ও মনকে সতেজ করে এবং স্ট্রেস কমায়।
সুতরাং, প্রতিদিনের স্ট্রেসকে অবহেলা না করে এর সমাধান করা আপনার হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।