১১ মাস পর আদালতে যা বললেন ‘দীপু মনি’

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ১১ মাস কারাভোগের পর প্রথমবারের মতো আদালতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মানিলন্ডারিং মামলার শুনানিতে তিনি বলেন, ‘‘আমি মামলা লড়তে চাই, তথ্যই আমার শক্তি। কিন্তু আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে পারছি না।’’

আদালতে দাঁড়িয়ে দীপু মনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা থাকলেও, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আইনি সহায়তা পাচ্ছেন না। এমনকি কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করাও কঠিন হয়ে উঠেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

দীপু মনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ২৮টি ব্যাংক হিসাবের কথা বলা হয়েছে, যা একেবারেই ভিত্তিহীন। আমার ছয়টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে, তার মধ্যে দুটি বন্ধ। আমি নিয়মিত করদাতা এবং আমার সব আয়কর বিবরণী রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, ‘‘সুনাম অর্জন করতে সারা জীবন লাগে, আর নষ্ট হতে দুই মিনিট। আমি আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জানতে চাই, কারণ আমি একজন নাগরিক।’’

এর আগে দুদকের পিপি আদালতে জানান, দীপু মনি পাঁচ কোটিরও বেশি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ২৮টি ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।

শুনানি শেষে আদালত দুদকের গ্রেপ্তার আবেদন মঞ্জুর করেন এবং দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে তাকে প্রিজন ভ্যানে করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়। গাড়ির ভেতর তিনি বিমর্ষ অবস্থায় ছিলেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কাওয়ালিন নাহার বলেন, ‘‘কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হলে যথাযথ কাগজপত্র ও প্রমাণ দরকার হয়। কেউ বঞ্চিত হন না। দীপু মনির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নেই।’’

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দীপু মনি ও তাঁর স্বামী তাওফিক নেওয়াজের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে। অভিযোগ অনুযায়ী, দীপু মনি ৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তাঁর ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৬০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১৯ আগস্ট দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *