
দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পর অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল বিশ্বের তিন প্রভাবশালী দেশ-যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পৃথক বিবৃতিতে তিন দেশের সরকার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেয়, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়া ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে নতুন মাত্রা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এক ভিডিওবার্তায় বলেন, “শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করতে, আজ আমি স্পষ্টভাবে বলছি—এই মহান দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।”
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক বিবৃতিতে জানান, “বর্তমান ইসরাইলি সরকার সুসংগঠিতভাবে কাজ করছে, যাতে কোনোদিনও একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হয়। তারা পশ্চিম তীরে ক্রমাগত বসতি সম্প্রসারণ করেছে,
যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ। গাজায় ধারাবাহিক হামলায় লক্ষাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে, দশ লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলি সরকারের ঘোষিত নীতি হলো—কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র থাকবে না। এই পরিস্থিতিতে কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। একইসঙ্গে আমরা ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়ের জন্য শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়তে অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দিচ্ছি।”
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, তাদের এই স্বীকৃতি কেবল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ। তারা আশা প্রকাশ করেন, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন গতি আনবে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিয়ে বিতর্ক চললেও, প্রভাবশালী তিন দেশের এই একযোগে পদক্ষেপ কূটনৈতিকভাবে বিরাট গুরুত্ব বহন করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই স্বীকৃতি ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে বৈশ্বিক চাপ আরও বাড়িয়ে তুলবে।