
বাংলাদেশেও এখন আর ক্যানসার বিরল নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর লাখো মানুষ নতুনভাবে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই ক্যানসারের প্রাথমিক সতর্কতার লক্ষণগুলি জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ সময়মতো শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার সাফল্য অনেক বেশি।
নিচে বাংলাদেশের সবচেয়ে সাধারণ ক্যানসারের প্রাথমিক ‘রেড ফ্ল্যাগ’ তুলে ধরা হলো—
স্তন ক্যানসার (Breast Cancer)
স্তন বা বাহুর নিচে অস্বাভাবিক ফোলা বা মাংসপিণ্ড
স্তনের আকার বা ত্বকে পরিবর্তন
রক্তমিশ্রিত স্রাব
ত্বকে লালচে দাগ বা কমলার খোসার মতো টেক্সচার
ব্রেস্ট সেল্ফ এক্সামিনেশন ও ম্যামোগ্রাফি প্রাথমিক শনাক্তকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাশয় ক্যানসার (Cervical Cancer)
অনিয়মিত রক্তস্রাব (মাসিকের বাইরে, যৌন সম্পর্কের পর বা মেনোপজের পর)
দুর্গন্ধযুক্ত বা রক্তমিশ্রিত যোনি স্রাব
পেলভিক ব্যথা বা যৌন মিলনে ব্যথা
প্রতিরোধে প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট ও এইচপিভি ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর।
ফুসফুসের ক্যানসার (Lung Cancer)
৩ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি
রক্তমিশ্রিত কফ
শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা ক্ষুধামান্দ্য
ধূমপান ও বায়ু দূষণ ঝুঁকি বাড়ায়; লো-ডোজ সিটি স্ক্যান প্রাথমিক শনাক্তকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মুখের ক্যানসার (Oral Cancer)
২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে না সারা আলসার বা ক্ষত
মুখে সাদা বা লাল দাগ
গিলতে কষ্ট হওয়া বা দীর্ঘস্থায়ী কণ্ঠস্বর খসখসানি
নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ ও তামাকজাত দ্রব্য এড়ানো ঝুঁকি কমায়।
কোলোরেক্টাল ক্যানসার (Colorectal Cancer)
দীর্ঘদিন ধরে মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন (কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়েরিয়া)
মলে রক্ত বা কালো মল
পেটে অস্বস্তি ও ব্যথা
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
৫০ বছরের বেশি বা পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কোলোনোস্কপি ও স্টুল টেস্ট জরুরি।
প্রোস্টেট ক্যানসার (Prostate Cancer)
প্রস্রাব করতে অসুবিধা, দুর্বল প্রবাহ বা ঘন ঘন প্রস্রাব
প্রস্রাব বা বীর্যে রক্ত
কোমর বা পেলভিক অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা
৫০ বছরের বেশি পুরুষদের জন্য পিএসএ ব্লাড টেস্ট ও ডিজিটাল রেক্টাল পরীক্ষা প্রয়োজন।
সচেতন হওয়া কেন জরুরি?
সব উপসর্গই ক্যানসারের নির্দেশ দেয় না, তবে অস্বাভাবিক পরিবর্তন কখনও অবহেলা করা ঠিক নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিলে বাঁচার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।