
সব ধরনের চাকরিজীবীর জন্য আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এটি সম্পূর্ণভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু চাকরিজীবীদের কোন কোন আয় করের আওতায় আসবে, সে বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি প্রকাশিত চলতি অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকায় বিস্তারিত বলা হয়েছে।
gnewsদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
নির্দেশিকায় দেখা যায়, সরকারি চাকরিজীবীদের মোট ১৫ ধরনের আয় করযোগ্য ধরা হয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ১১ ধরনের আয়ে কর দিতে হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য করযোগ্য আয়ের মধ্যে রয়েছে মূল বেতন, কোনো ধরনের বকেয়া বেতন এবং বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য পাওয়া অতিরিক্ত বেতন। পাশাপাশি বাড়িভাড়া, মাসিক চিকিৎসা ভাতা ও যাতায়াত ভাতাও করের আওতায় এসেছে। ঈদ বা দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেওয়া উৎসব ভাতা, সহায়ক কর্মীর জন্য পাওয়া আর্থিক সুবিধা এবং অব্যবহৃত ছুটি নগদায়নের অর্থেও কর দিতে হবে।
এ ছাড়া বিশেষ কোনো অবদানের জন্য প্রাপ্ত সম্মানী বা পুরস্কার, অফিসের কাজের বাড়তি সময়ের জন্য দেওয়া ওভারটাইম ভাতা এবং বৈশাখী ভাতাকেও করযোগ্য ধরা হয়েছে। সরকারি ভবিষ্য তহবিলে জমাকৃত টাকার সুদ, এককালীন প্রদত্ত লাম্পগ্র্যান্ট, চাকরি ছাড়ার সময় প্রাপ্ত গ্র্যাচুইটি—সবই করের আওতায় রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিজীবীদের করযোগ্য আয়ের মধ্যে মূল বেতন ও বিভিন্ন ধরনের ভাতা রয়েছে। অগ্রিম বেতন বা জমে থাকা বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রেও কর দিতে হবে। চাকরি শেষে পাওয়া অ্যানুইটি, পেনশন কিংবা আনুতোষিক অর্থ করের আওতায় আনা হয়েছে।
চাকরির অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে পাওয়া পারকুইজিট, যেমন বিনা খরচে বাড়ি, বিদ্যুৎ বা ফোন সুবিধার ওপরও কর বসবে। বেতন বা মজুরির পরিবর্তে অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তি, কর্মচারী শেয়ার স্কিম থেকে আয়, অফিস থেকে বিনা খরচে বা কম খরচে পাওয়া আবাসন ও গাড়ি সুবিধা—সবই করযোগ্য। এ ছাড়া নিয়োগকর্তার দেওয়া অতিরিক্ত সুবিধা, যেমন ক্লাব সদস্যপদ বা ভ্রমণ সুবিধার আর্থিক মূল্যও করের মধ্যে পড়বে। এমনকি প্রভিডেন্ট ফান্ডে কোম্পানির দেওয়া চাঁদাও করের আওতায় ধরা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলছে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় চাকরিজীবীর ক্ষেত্রেই এসব আয় স্পষ্টভাবে করযোগ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে।