ভারতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, রেগে গিয়ে যা বললেন শুভেন্দু

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই স্লোগানকে বাংলাদেশের বলে উল্লেখ করে সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিধানসভার সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা’ ভারতের স্লোগান নয়, এটি বাংলাদেশের। বাংলাদেশের স্লোগান ভারতে চলবে না।

গত কয়েক বছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক সভা, মিছিল, নির্বাচনী প্রচারসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ব্যবহার করে আসছে। এই প্রেক্ষাপটেই বিরোধী পক্ষের তীব্র আপত্তি নতুন নয়, তবে এবারের বিতর্কের সূত্রপাত হয় আরও সরাসরি এক সংঘাতে।

বুধবার (৩০ জুলাই) যাত্রাপথে শুভেন্দু অধিকারীর গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে এক তৃণমূল কর্মী ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুভেন্দু ওই কর্মীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ও তার রক্ষীদের নির্দেশ দেন তাকে সরিয়ে দিতে। এরপর সেই কর্মীর সামনে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘জয় শ্রীরাম’।

শুভেন্দুর মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনে পাল্টা ওই তৃণমূল কর্মী ফের ‘জয় বাংলা’ বলেন। জবাবে শুভেন্দু অধিকারী তাকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে কটাক্ষ করেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ওই তৃণমূল কর্মী শেখ মঈদুল বলেন, ‘আপনিই রোহিঙ্গা’।

এই ঘটনার পরপরই রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। একদিকে বিজেপি নেতাদের ‘জয় শ্রীরাম’, অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘জয় বাংলা’- এই দুই স্লোগান নিয়ে রাজনীতিতে ফের মেরুকরণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

‘জয় বাংলা’ স্লোগানের বিরোধিতা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ভারত মাতা কী জয়’ বলতে হবে। আর যদি আপনি হিন্দু হন, তবে ‘জয় শ্রীরাম’ বলবেন। মুসলমানদের ‘জয় শ্রীরাম’ বলার দরকার নেই।

তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে হিন্দুবিরোধী মনোভাবের অভিযোগও তোলেন। শুভেন্দু বলেন, দিঘাতে একটি ধর্মীয় মিছিলের জন্য হাইকোর্টের পারমিশন নিতে হয়েছে। তিনি হিন্দুবিরোধী মুখ্যমন্ত্রী। হিন্দুদের উপর বাধা সৃষ্টি করছেন মমতা।

এই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের ‘স্লোগান বনাম স্লোগান’ বিতর্ক উসকে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই এই ধরনের ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী আবেগ ঘনিয়ে তুলতে চাইবে রাজনৈতিক দলগুলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *