এই একটি শর্ত না মানলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একচুলও এগোবে না ইরান

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার বলেছেন, যদি তার দেশের বিরুদ্ধে আর কোনো হামলা না হয়—এই মর্মে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করে, তাহলে ইরান আবারও পারমাণবিক আলোচনা শুরু করতে রাজি থাকবে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি তেহরানভিত্তিক বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, “ইরান সবসময়ই পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে, আলোচনা পুনরায় শুরু হলে সেটি যেন যুদ্ধের দিকে না গড়ায়—এই নিশ্চয়তা থাকতে হবে।”

সম্প্রতি ইসরায়েলের ১২ দিনব্যাপী ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ এবং ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার প্রসঙ্গ টেনে আরাগচি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ পারমাণবিক আলোচনা আবার শুরু করতে চায়, তাহলে সর্বপ্রথম এমন হামলা ভবিষ্যতে আর হবে না—এই নিশ্চয়তা দেওয়া আবশ্যক। আমাদের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কারণে এখন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে গেছে।”

এইসব হামলার পর ইরান জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা (IAEA)-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে দেয়। যার ফলে সংস্থার পরিদর্শকরা ইরান ছাড়তে বাধ্য হন।

আরাগচি বলেন, ইরানি আইনের অধীনে এখন থেকে জাতিসংঘ সংস্থার যে কোনো সহযোগিতার অনুরোধ ‘ধাপে ধাপে’ এবং ইরানের স্বার্থ বিবেচনায় বিবেচনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, সংস্থার যেকোনো পরিদর্শন ইরানের “নিরাপত্তাজনিত” উদ্বেগ ও পরিদর্শকদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় নিয়েই করতে হবে। “আক্রান্ত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ধ্বংসস্তূপে যুদ্ধের সময়কার বিস্ফোরক ও তেজস্ক্রিয় উপাদান ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি গুরুতর,”—যোগ করেন তিনি।

তিনি একই সঙ্গে পুনরায় উল্লেখ করেন, ইরান নিজ ভূখণ্ডে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাবে—এই অবস্থানেই অনড় থাকবে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পূর্বে জানিয়েছেন, এমনটা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।

ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল বলেই তারা হামলা চালিয়েছে। যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (IAEA) আগেই জানায়, ইরান ২০০৩ সালের পর থেকে সংগঠিতভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো কর্মসূচি পরিচালনা করেনি। তবে ইরান ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করছিল, যা ৯০ শতাংশ অস্ত্র-গ্রেড পর্যায়ের এক ধাপ নিচেই ছিল—এ নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *