ইরানের পক্ষে প্রকাশ্যে দাঁড়ালো যেসব দেশ, দিল ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কেন্দ্রে এখন ইসরায়েল ও ইরান। গাজায় হামাসবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি ইরানে সামরিক হামলা চালিয়ে তেলআবিব এখন একাধিক ফ্রন্টে লড়াইয়ে ব্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে এক সময় একা লড়াই করা ইরানের পাশে এখন প্রকাশ্যে দাঁড়াতে শুরু করেছে একাধিক প্রভাবশালী দেশ।

রাশিয়া:
ইসরায়েলের হুমকির বিপরীতে সরব হয়েছে রাশিয়া। মস্কো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো হামলা বরদাস্ত করা হবে না। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্রকেও এই সংকটে না জড়াতে সতর্ক করেছে ক্রেমলিন।

তুরস্ক:
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সরাসরি ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।” তুর্কি সেনাবাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতির কথাও জানা গেছে। আঙ্কারা ইরানের প্রতিরক্ষাকে সমর্থন জানিয়ে বারবার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইসরায়েলকে।

চীন:
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, চীন সম্প্রতি একটি কার্গো বিমান ইরানে পাঠিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই বিমানে সামরিক সহযোগিতা বা প্রযুক্তি পৌঁছানো হয়েছে। চীন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে তাদের অবস্থান ইসরায়েলের পক্ষে নয়—এটি স্পষ্ট।

উত্তর কোরিয়া:
‘রকেটম্যান’ খ্যাত কিম জং উন প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে “মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সার” বলে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও সরাসরি সামরিক সহায়তা দেয়নি, তবে কিমের বক্তব্য ও রকেট সক্ষমতা ইসরায়েলকে বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ভেনেজুয়েলা:
দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি ইসরায়েলের হামলার কড়া সমালোচনা করেছে। ভেনেজুয়েলান জনগণ ইরানের সমর্থনে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন, তাদের সরকারের পক্ষ থেকেও সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে।

পাকিস্তান:
ইসলামাবাদ জানিয়েছে, “যে কোনো সংকটে ইরানের পাশে থাকবে পাকিস্তান।” যদিও এ বিষয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে, তবুও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা ইরানকে সমর্থন জানিয়েছে।

ইরাক ও জনগণ:
ইরাক সরকার নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করলেও, দেশটির জনগণ সরাসরি ইরানের পক্ষে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। কিছু এলাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকাণ্ডে বাধাও দেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিন, লেবানন ও ইয়েমেনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো:
ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী এবং হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সংগঠন ইরান থেকেই অর্থ ও সামরিক সহায়তা পেয়ে থাকে।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ স্পষ্ট হচ্ছে। আগে যেখানে ইসরায়েলের পাশে পশ্চিমা দুনিয়া থাকত, এখন সেখানে ইরানও একা নয়। চীন, রাশিয়া, তুরস্কের মত শক্তিধর রাষ্ট্রের সমর্থন পেলে এই সংঘাত আরও ভয়াবহ দিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *