
ধূমপান একটি ক্ষতিকর অভ্যাস, যা শুধু আমাদের ফুসফুসেরই ক্ষতি করে না, বরং পুরো শরীর এবং বিশেষ করে ত্বকের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো আমরা প্রায়শই উপেক্ষা করি। কিন্তু প্রতিদিন ধূমপান করলে আপনার ত্বক ও দেহের ভেতরে কী কী ঘটে, তা জানলে আপনি সত্যিই অবাক হবেন।
আসুন জেনে নিই, ধূমপানের ফলে আপনার ত্বক ও দেহের কী কী পরিবর্তন ঘটে:
১. ত্বকের অকাল বার্ধক্য
ধূমপান করলে ত্বকে বয়সের ছাপ দ্রুত দেখা দেয়। নিকোটিন এবং অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ত্বকের কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামক প্রোটিন ভেঙে দেয়। এই প্রোটিনগুলো ত্বককে টানটান ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। যখন এই প্রোটিনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন ত্বকে বলিরেখা, ঢিলেঢালা ভাব এবং অকালে বয়স্কদের মতো চেহারা দেখা দেয়।
২. শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়
ধূমপান করলে রক্তনালী সংকুচিত হয়, যা শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয়। ত্বকে যখন পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না, তখন ত্বক শুষ্ক ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এর ফলে ত্বক তার উজ্জ্বলতা হারায় এবং ফ্যাকাসে দেখায়।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়
ধূমপানে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলো দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এর ফলে ত্বক সহজেই সংক্রমণ এবং চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারে। একই সঙ্গে, এটি দেহের ভেতরে প্রদাহ তৈরি করে, যা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
৪. দাঁত ও নখের ক্ষতি
ধূমপানের ফলে দাঁতে কালো দাগ পড়ে এবং ধীরে ধীরে তা হলুদ হয়ে যায়। এছাড়াও, এতে নখের রং পরিবর্তিত হয়। নখ ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং অনেক সময় নখে ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে পারে।
৫. হার্ট ও ফুসফুসের ক্ষতি
ধূমপানের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে হার্ট এবং ফুসফুসের ওপর। এটি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করে। ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ায় শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না।
ধূমপান কেবল একটি অভ্যাস নয়, এটি আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একটি মারাত্মক আঘাত। নিজেকে সুস্থ রাখতে যত দ্রুত সম্ভব এই ক্ষতিকর অভ্যাসটি ত্যাগ করুন।