মৃত্যুর আগে নিজের শেষ ৩টি ইচ্ছার কথা বলেছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান

সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ মারা যাওয়ার আগে নিজের শেষ ৩টি ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। মাসখানেক আগে সাবেক এই সেনাপ্রধান তার বন্ধু অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বাহারকে এ ইচ্ছার কথা জানান।

তার মৃত্যুর পর সেসব ইচ্ছার কথা এম হারুন-অর-রশিদের সেজো বোনের জামাতা ডাক্তার জহির গণমাধমের সামনে প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম ক্লাবে গেস্ট হাউসে ডাক্তার জহির গণমাধ্যমকে জানান, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বাহার তাকে ফোন করে প্রথম

সাবেক সেনাপ্রধানের মৃত্যুর খবর জানান। তখন তিনি বলেছিলেন, মাসখানেক আগে হারুন তার শেষ ৩টি ইচ্ছার কথা বলেছিলেন।

ওই তিন ইচ্ছা হলো – ১) মৃত্যুর পর তার মরদেহখানা দাফন করতে যাতে দেরি না করা হয়, ২) পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার পাশে যেন তাকে দাফন করা হয় এবং ৩) মৃত্যুর পর তার মরদেহকে রাষ্ট্রীয় কোনো সম্মান দেওয়া না হয়।

ডাক্তার জহির বলেন, আমি উত্তরে কর্নেল বাহারকে সাবেক সেনা প্রধানের শেষ ৩টি ইচ্ছে তার সহধর্মিণী ও মেয়েকে জানাতে অনুরোধ করি।

জানা গেছে, ডেসটিনির আর্থিক কেলেঙ্কারির একটি মামলায় হাজিরা দিতে রোববার চট্টগ্রাম আসেন সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন-অর-রশিদ। পরে চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসের ৩০৮ নম্বর রুমে ওঠেন। সোমবার মামলায় হাজিরা দিতে চট্টগ্রাম আদালতে এম হারুন-অর-রশিদকে না দেখে তার আইনজীবীর আত্মীয়ের কাছে আদালতে উপস্থিত না হওয়ার বিষয়টি জানতে চান।

এ বিষয়ে সাবেক সেনাপ্রধানের সেজো বোনের জামাতা ডাক্তার জহির বলেন, সোমবার সকালে হারুনের আইনজীবীর সহকারীরা তিনি কোথায় আছেন এমন খবর জানতে চেয়ে ফোন দেন। তখন আমি তাদের চট্টগ্রাম ক্লাবে যোগাযোগের জন্য পরামর্শ দিই। পরে কর্নেল বাহারের ফোনে জানতে পারি তিনি আর নেই।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের আবাসিক কক্ষ থেকে এম হারুন-অর-রশিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রোববার (৩ আগস্ট) রাতে তিনি কক্ষটিতে ছিলেন। সোমবার সকালে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় কক্ষটি খুলে অচেতন অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন হারুন অর রশিদ। তিনি ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করে। অবসর গ্রহণের পর তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৭ বছর। তার স্ত্রী ও এক ছেলে এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় ও গুনগ্রাহী রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *