সুখবর: এসএসসি’তে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় হতে পারে আরেকটি পরীক্ষা

চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই ফেল করেছে। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আরেকটি পরীক্ষা আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।

তারা বলছেন, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে বিগত ১৫ বছর সহজ প্রশ্নে পরীক্ষা, নম্বর বাড়িয়ে দেয়া, খাতা মূল্যায়নে শিথিলতাসহ নানা পদ্ধতিতে আকাশচুম্বী পাসের হার দেখানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, চলিত বছর ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার ৬৮ দশমকি ৪৫ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৭ পর্যন্ত সবোর্চ্চ পাসের হার ছিল ৭০ শতাংশ। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই পাসের হার বেড়ে ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ছড়াছড়ি হয় জিপিএ ৫ ও গোল্ডন এ প্লাসেরও। অথচ ফলাফলে শীর্ষে থেকে বা জিপিএ ৫ পেয়েও ৯০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিসহ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ছিটকে পড়েছেন।

তাহলে এক যুগ ধরে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো ফলাফল কীভাবে এসেছে- এমন প্রশ্নে শিক্ষাবিদরা বলছেন, সহজ প্রশ্নে পরীক্ষা, খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিথিলতাসহ নানা পদ্ধতিতে উর্ধ্বগামী ফলাফল দেখিয়ে বিগত সরকার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম সময় সংবাদকে বলেন,
রাজনৈতিক একটা অহংকারের অংশ হিসেবে ভালো ফলাফল দেখাতে খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত নমনীয় ছিল। প্রশ্নফাঁসের উৎসব শুরু হয়েছিল। সরকার ওইটা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। এতে শিক্ষার মানের অবনতি হয়েছে।

আর ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে পরীক্ষায় ফলাফলে কথিত বাম্পার ফলন দেখানোর প্রবণতায় সন্তানরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন অভিভাবক ও শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তরা।

তারা বলছেন, এ প্লাস পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারছে না বহু শিক্ষার্থী। আমরা চাই, যারা মেধাসম্পন্ন, তারাই বের হয়ে আসুক। অহেতুক পাস করিয়ে দিয়ে তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কর্মসংস্থান দেয়া না গেলে তো এমনটা করে লাভ নেই।

এবার ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ লাখই ফেল করেছে। তাই বিপুল সংখ্যক এই শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আরেকটি পরীক্ষা আয়োজন করা যায় কি না- তা ভেবে দেখার পরামর্শ শিক্ষাবিদদের।

অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, তিন মাস আরেকটা প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য আরেকটা পরীক্ষার আয়োজন করলে সেটা খুব বেশি কঠিন হবে না।

অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নের পরামর্শ শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *