
শিক্ষাক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, স্থানীয় পর্যায়ে জবাবদিহি এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে দেশের ৫২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান পাঠিয়েছে সরকার। ‘পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস (পিবিজিএসআই)’ স্কিমের আওতায় এই অনুদান দেওয়া হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে বরাদ্দ হওয়া মোট ২৬ কোটি টাকা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাবেও পৌঁছে গেছে। আর এই অনুদানের একটি নির্ধারিত অংশ পাবে সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরাও।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই অনুদান দেওয়া হয়েছে ‘স্কুল/মাদরাসা/কলেজ ব্যবস্থাপনা জবাবদিহি অনুদান’ (এসএমএজি/এমএমএজি/জিবিএজি) হিসেবে। তবে, অনুদানের টাকা যথাযথভাবে এবং নিয়ম মেনে ব্যয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একাধিক নির্দেশনাও দিয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংশ্লিষ্ট স্কিম অপারেশন ম্যানুয়ালের বিধান মেনে খাতভিত্তিক ব্যয়ের পরিকল্পনা করতে হবে। এ জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রকৃত চাহিদা চিহ্নিত করে রেজুলেশন নিতে হবে।
এরমধ্যে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান অনুদানের ৫ লাখ টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা থেকে ২০ জন সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে। আর টাকা দিতে হবে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে এবং যথাযথ রেকর্ড রাখতে হবে। অবশিষ্ট চার লাখ টাকা ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করবে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি। খাতভিত্তিক ব্যয়ে অগ্রাধিকার পাবে শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগ, যেমন- শিক্ষাসামগ্রী, টয়লেট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন, ডিজিটাল ল্যাব, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ বা পাঠাগার সম্প্রসারণ।
আর সব ক্রয় এবং ব্যয় সরকারি ‘ক্রয় আইন ও বিধিমালা’, ‘অপারেশন ম্যানুয়াল’ এবং ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নীতিমালা–২০২৩’ অনুসরণ করে করতে হবে। নির্ধারিত হারে ভ্যাট ও আয়কর কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। প্রতিটি খরচের বিপরীতে স্টক রেজিস্টার, ক্যাশবই ও বিল-ভাউচার সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। টাকা ব্যয়ের পর পূর্ণাঙ্গ বিল-ভাউচার, মনিটরিং ও বাস্তবায়ন কমিটির যৌথভাবে স্বাক্ষরিত টপশিটসহ আগামী ২৮ আগস্টের মধ্যে ঢাকা শিক্ষা ভবনের স্কিম দপ্তরে জমা দিতে হবে। প্রমাণপত্রের একটি সত্যায়িত অনুলিপি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া, মাঠপর্যায়ে অনুদান ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ তত্ত্বাবধানে অন্তত ৩০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পরিদর্শন কার্যক্রমের প্রতিবেদন আগামী তিন মাসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।