শেখ হাসিনা আবার ‘প্রধানমন্ত্রী’ হয়ে দেশে ফেরার প্রসঙ্গে যা বললেন প্রেস সচিব

ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ওই ছবি ক্যাপশনে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের বরাতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে ফিরবেন।

বুধবার (১২ মার্চ) প্রকাশিত টাইমস অব ইন্ডিয়ার সেই ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘পাগলের সুখ মনে মনে’।

শফিকুলের সেই পোস্টের কমেন্টে এটা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতে দেখা গেছে অনেককেই। শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে তাকে বরণ করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রস্তুত রয়েছে বলেও মন্তব্য তাদের।

পোস্টের ক্যাপশনে টাইমস অব ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে, ‘হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা রাব্বি আলম দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা শীঘ্রই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসবেন। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপদ স্থান দেওয়ার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ।’

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতা আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যর্পণ অনুরোধ জানিয়েছে।

তবে সে অনুরোধের আনুষ্ঠানি কোনো জবাব আসেনি দিল্লি থেকে। ভারতের জবাব না আসলেও গণহত্যার বিচার কার্যক্রম থেমে নেই।

২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ঈদের সম্ভাব্য তারিখ প্রকাশ, রোজা ২৯ নাকি ৩০টি?

আমিরাত জ্যোতির্বিদ্যা সোসাইটির চেয়ারম্যান এবং আরব ইউনিয়ন ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড স্পেস সায়েন্সেসের (এইউএএসএস) সদস্য ইব্রাহিম আল জারওয়ান জানান, শাওয়াল মাসের চাঁদ শনিবার (২৯ মার্চ), সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জন্ম নেবে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, এটি সূর্যাস্তের প্রায় ৩ ঘণ্টা পর পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকবে তবে অত্যন্ত ক্ষীণ হবে। চাঁদের পৃষ্ঠের মাত্র ০.০১ শতাংশ অংশ দৃশ্যমান থাকবে, যা দিগন্তের সমান্তরাল অবস্থানে থাকবে এবং সূর্যাস্তের পাঁচ মিনিট পরই অস্ত যাবে, তখনো সূর্যের তীব্র আলো বিদ্যমান থাকবে।

ফলে চাঁদ দেখা কঠিন হতে পারে বলে ৩০ মার্চ (রোববার) রমজানের শেষ দিন হবে এবং সোমবার (৩১ মার্চ) শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ও ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন হিসেবে গণ্য হবে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই জ্যোতির্বিদ্যা গ্রুপ। চলতি বছরের রমজান মাস ২৯ নাকি ৩০ দিনের হবে, সেই তথ্যও প্রকাশ করেছে তারা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবার ৩০ মার্চ শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ৩১ মার্চ পালিত হবে ঈদ।

সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে দুবাই জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র বলেছে, ‘যদি আপনারা চাঁদ দেখতে পান, তাহলে পর্যবেক্ষণের বিষয়টি স্থানীয় কমিটি অথবা অফিসিয়াল চাঁদ দেখা কমিটিকে জানান। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর শুরু হতে পারে।’

আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোত যদি ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর হয়, তাহলে এবার ওই অঞ্চলের মানুষ ৩০টি রোজা পূর্ণ করবেন। মধ্যপ্রাচ্যে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়। এরপর ১ মার্চ থেকে সেখানে শুরু হয় পবিত্র এ মাস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমিরাতের চাঁদ দেখা কমিটি আগামী ২৯ মার্চ শাওয়াল মাসের চাঁদ অনুসন্ধান করবে। ওইদিন দেশটিতে রমজানের ২৯তম দিন থাকবে। এছাড়া যদি রমজান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করে তাহলে এবার আমিরাতের মুসল্লিরা ঈদে পাঁচদিনের ছুটি পাবেন বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

মধ্যরাতে শাহবাগে কী হচ্ছে?

গণজাগরণ মঞ্চের মূখ্য সংগঠক লাকি আক্তারের গ্রেফতার ও ধর্ষণের দ্রুত বিচার সহ ৫ দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ইনকিলাব মঞ্চ। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা বুধবার (১২ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকেই শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছে ও ৫টি দাবি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তুলে ধরেছে।

ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা বলছেন, যতদিন তাদের দাবি না মানা হবে ততদিন তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এমনকি যদি ঈদ পর্যন্তও থাকা লাগে তারা এখানেই ঈদ করতে প্রস্তুত আছেন। সন্ধ্যার পরে তারা একটি মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে আবার ফিরে আসে শাহবাগে।

ইনকিলাব মঞ্চের পাঁচ দফা দাবি হলো, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

একইসঙ্গে কেউ মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করলে তাকেও সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে; বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দায়িত্বরত নিরস্ত্র পুলিশের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে; অবিলম্বে লাকী আক্তার ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে ২০১৩ সালের রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র উন্মোচন করতে হবে;

জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা ও পিলখানা গণহত্যার স্বাধীন বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে দেশে ফিরছেন শেখ হাসিনা!

গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনা ভারতে পলায়ন করেন। পরে তার ও তার দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় কয়েক শ’ মামলা দায়ের করা হয়। তাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি দেশের বিভিন্ন মহলের।

এমতাবস্থায় বুধবার (১২ মার্চ) ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই-তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডক্টর রাব্বি আলম এক সাক্ষাতকারে দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবারও বাংলাদেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা। এসময় তিনি শেখ হাসিনাকে নিরাপদে ভারতে আশ্রয় দেয়ার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনও করেন।

ডক্টর রাব্বি আলমের মতে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য তরুণ প্রজন্মকে দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম একটি ভুল করেছে, কিন্তু এটি তাদের দোষ নয়, তাদের কারসাজি করা হয়েছে।

ডক্টর রাব্বি আলম বলেন, বাংলাদেশ এখন আক্রমণের মধ্যে রয়েছে, এবং এই সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপে সমাধান হওয়া দরকার। একটি রাজনৈতিক অভ্যুত্থান গণতন্ত্রের অংশ হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা নয়। এটি একটি সন্ত্রাসী বিদ্রোহ।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের বহু নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে তিনি জানান। ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানাই যে তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপদ ভ্রমণের পথ সুগম করেছেন।

তিনি বাংলাদেশের বর্তমান উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বলেন, তাদের ফিরে যেতে হবে, যেখান থেকে তারা এসেছে।

ডক্টর রাব্বি আলম জোর দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসছেন, কিন্তু এই সংকট তরুণদের ভুল নয়, বরং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

মসজিদে ঢুকে ৩ ভাইকে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেফতার!

মাদারীপুরে মসজিদে ঢুকে তিন ভাইকে হত্যার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত হোসেন সরদারকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। রাজধানী ঢাকার আশুলিয়া থানার চিত্রাশাইল থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে র‍্যাব-৮-এর হেডকোয়াটার্স বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিস্তার আহমেদ।

তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি হোসেন সরদার নিহত তিন ভাইয়ের আপন চাচা। বালু উত্তোলন নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল।

কর্নেল আহমেদ বলেন, যারা নিহত হয়েছেন এবং হত্যায় যারা অভিযুক্ত তারা সবাই একসময়ে আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বালু ব্যবসা ও বালু মহলার ইজারা নিয়ে বিরোধের সূত্র ধরে হোসেন সরদারের নেতৃত্বে ৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৮০/৯০ জনের দল নিয়ে চারটি বাড়িতে হামলা চালায়।

প্রাণ বাঁচাতে ভিক্টিমরা বাড়ির সামনের মসজিদে আশ্রয় নিলে হোসেন সরদারের নেতৃত্বের সন্ত্রাসীরা মসজিদে ঢুকে সাইফুল সরদার, তার ভাই আতাউর সরদারকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে।

এ ছাড়া তাদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদারকে (১৮) গুরুতর জখম করলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হামলাকারীরা আরও পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করে এবং নিহতদেরসহ চারটি বাড়িতে আগুন দিয়ে লুটপাট করে।

অধিনায়ক বলেন, এই ঘটনায় মোট ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। র‍্যাব-৮-এর অধীনে মাদারীপুর ক্যাম্পের পৃথক অভিযানে সুমন সরদার (৩৩) নামে এজাহারভুক্ত আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নবদম্পতি যে কারণে উপাধ্যক্ষকে কুপিয়ে খুন করলো, জানালো পুলিশ

হাবীবুল্লাহ বাহার ডিগ্রি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাসায় আশ্রয় নেওয়া নবদম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পুলিশ জানায়, সাইফুর রহমানের সঙ্গে নবদম্পতির সম্পর্ক ছিল খুবই সন্দেহজনক। তদন্তের সূত্রে জানা যায়, নবদম্পতি গত ৭ মার্চ পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন এবং কিছুদিনের মধ্যে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়।

সাইফুর রহমানের বাসায় বসবাসের সময় নবদম্পতির মধ্যে অস্বস্তি এবং ক্ষোভ তৈরি হতে থাকে, বিশেষ করে সাইফুর রহমান তরুণীকে শারীরিকভাবে বিরক্ত করতে শুরু করেন।

এক পর্যায়ে, সোমবার রাতে, সাইফুর রহমান এবং নবদম্পতির মধ্যে তীব্র ঝগড়া শুরু হয়, এবং এর পরই ছেলেটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাইফুর রহমানকে আঘাত করেন। পরবর্তীতে, তারা বাসা থেকে পালিয়ে যান এবং সাইফুর রহমানের মোবাইল ফোন ও বাসার চাবি নিয়ে চলে যান।

পুলিশের কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। সাইফুর রহমানের শারীরিক আচরণ, নবদম্পতির ক্ষোভ, এবং বাসায় তাদের বন্দি করা—এসব বিষয়ের সম্মিলিত প্রভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে তারা মনে করছেন। তবে এখনো হত্যার মূল কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

প্রতিবেশীরা জানান, সোমবার ভোরে সাইফুর রহমান বাসার টয়লেটের জানালা থেকে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন।

তাদের চিৎকার শুনে কিছু প্রতিবেশী এগিয়ে যান এবং ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে সাইফুর রহমানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিশ্ববাসী এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হতে যাচ্ছে! এই রমজানেই যে দিন দেখা যাবে ’ব্লাড মুন’

২০২৫ সালের ১৩ বা ১৪ মার্চ, রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে, বিশ্ববাসী এক বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। এই দিনে আকাশে দেখা যাবে একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ, যা ‘ব্লাড মুন’ বা রক্তিম চাঁদ নামে পরিচিত। এটি ২০২২ সালের পর প্রথমবারের মতো একটি সম্পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হবে, যেখানে চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় সম্পূর্ণভাবে ঢেকে গিয়ে রক্তিম বর্ণ ধারণ করবে।

পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ কী?
যখন পৃথিবী সূর্যকে আংশিকভাবে ঢেকে দেয়, তখন পৃথিবী থেকে চাঁদ আংশিকভাবে দৃশ্যমান হয়, এবং একে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়। আর যখন পৃথিবী সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে, তখন পৃথিবী থেকে চাঁদ সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়, এবং একে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এই মহাজাগতিক দৃশ্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে দৃশ্যমান হবে।

উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা: যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং চিলি থেকে সম্পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ উপভোগ করা যাবে।
ইউরোপ: যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন এবং জার্মানির মতো কিছু দেশে চন্দ্রগ্রহণের আংশিক পর্যায় দেখা যাবে, তবে গ্রহণ চলাকালীন সময়েই চাঁদ অস্ত যাবে।

আফ্রিকা: মরক্কো, মিশর, আলজেরিয়া এবং তিউনিসিয়া মতো দেশগুলোতে গ্রহণের প্রথম অংশ দৃশ্যমান হবে, তবে চাঁদ অস্ত যাওয়ার কারণে সম্পূর্ণ গ্রহণ দেখা যাবে না।

অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর-পূর্ব এশিয়া: জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং পূর্ব চীনে চন্দ্রোদয়ের সময় গ্রহণের শেষ অংশ দেখা যাবে।

মধ্যপ্রাচ্য: সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং ইরাকের মতো দেশগুলোতে পূর্ণগ্রহণ দেখা যাবে না। এসব অঞ্চলে শুধুমাত্র গ্রহণের প্রাথমিক পর্যায় কিছুটা দৃশ্যমান হতে পারে।

এই বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যটি, বিশেষ করে রমজান মাসে, আকাশপ্রেমীদের জন্য এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
এই ‘ব্লাড মুন’ চন্দ্রগ্রহণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুসারে, চাঁদ যখন সম্পূর্ণরূপে পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে প্রবেশ করে, তখন সূর্যালোক পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দিয়ে ছেঁকে গিয়ে লালচে আভায় প্রতিফলিত হয়।

এই প্রক্রিয়াকে Rayleigh Scattering বলা হয়, যা সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়ের সময় আকাশকে লালচে দেখানোর কারণের মতোই কাজ করে।রমজান মাস মুসলমানদের জন্য বিশেষ পবিত্র ও আত্মশুদ্ধির সময়। ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, চন্দ্রগ্রহণ একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এসময় ইসলামে সালাতুল খুসুফ বা চন্দ্রগ্রহণের বিশেষ নামাজ আদায়ের বিশেষ এক গুরুত্ব রয়েছে।

এই মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগ করতে কোনো বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। এটি খালি চোখেই নিরাপদে দেখা যাবে। বিশেষ করে আমেরিকার দর্শকদের জন্য ০৬:২৬ থেকে ০৭:৩১ UTC সময়ের মধ্যে চাঁদের লালচে রঙ সবচেয়ে স্পষ্ট দেখা যাবে।

যেসব অঞ্চলে এ গ্রহণ দৃশ্যমান হবে না, তারা অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে এটি উপভোগ করতে পারবেন। নাসা জানাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরবর্তী পূর্ণগ্রাহী চন্দ্রগ্রহণ ২০২৬ সালের মার্চে হবে, তাই এটি একটি বিশেষ দৃষ্টিনন্দন মুহূর্ত যা আকাশপ্রেমীদের জন্য এক অপরিহার্য অভিজ্ঞতা।

ফেসবুকে এবার যে ‘সতর্ক’ পোস্ট করলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

২০২৫-এ এসে ২০১৩ ফেরানোর চেষ্টা করবেন না বলে সাবধান করে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ১১টা ৪৮ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি দ্বিতীয় গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতে এ পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘২০২৫ এ এসে ২০১৩ ফেরানোর চেষ্টা করবেন না। সাবধান!’

এর পর ভোর রাত ৪টা ২৪ মিনিটে আরেকটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে তিনি লিখেন, শাহবাগ একদিনে গড়ে উঠেনি। এককভাবে কেউ শাহবাগ গড়ে তুলেনি। শাহবাগ কায়েম করতে সমর্থন দিয়েছিল তথাকথিত সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, আমলা, সাংস্কৃতিক কর্মী, বিদেশী এজেন্ট, রাজনীতিবিদ এবং ক্রীড়াবিদরাও।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা লিখেছেন, ‘শাহবাগ কেড়ে নিয়েছিল এদেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা থেকে শুরু করে সব ধরনের মৌলিক মানবাধিকার। কেড়ে নিয়েছিল স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে গুম, খুন, আয়নাঘর, বিচারিক হত্যাকাণ্ডসহ যাবতীয় অপকর্মের বৈধতা দিয়েছিল শাহবাগ।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘শাহবাগ কায়েমে যারা সচেষ্ট ছিল, তাদেরই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বিগত পনেরো বছরে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদেরই সমর্থনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ক্ষমতার মসনদে ছিল।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এ সমন্বয়ক লিখেছেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা বিগত পনেরো বছরে সংঘটিত সকল অন্যায়, অপকর্ম, গুম, খুন ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে চাই।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘আমরা আশা রাখি, সকলের প্রচেষ্টায় তা সম্ভব। ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ জমিনে ইনসাফ কায়েম হবে। জুলাইয়ের শহীদদের স্পিরিট রক্ষায় আমরা সদা জাগ্রত। পুনরাবৃত্তি করছি, বিগত শাসনামলে হওয়া সকল অন্যায় ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

যেসব ‘কৌশল’ ব্যবহার করে জনগণের বিশ্বাস অর্জন করতেন হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা নিজেকে প্রাণবন্ত করে সাবলীলভাবে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের সামনে বিশ্বাসযোগ্যভাবে কিছু কথা বলতেন। তিনি প্রায়ই কবিতার ছন্দে বলতেন-‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’ পরিবারের সদস্যদের পাশে রেখে প্রায়ই বলতেন-‘সন্তানদের জন্য আমি কোনো সম্পদ করিনি, তাদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করেছি।’ দলের এবং দলের বাইরের মানুষদেরও তিনি সবক দিতেন দুর্নীতি না করার।

সত্যিকার অর্থে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন এক রকম শূন্যহাতেই ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সামনে আসতে থাকে হতবাক করার মতো তথ্য। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দোসরদের বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি ও লুটপাটের তথ্য সামনে আসতে থাকে। একে একে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের সব পর্যায়ের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দুর্নীতির সম্পদও প্রকাশ্যে আসে। অনেকে গ্রেফতার হন। আত্মগোপনে ও দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন অনেকে। তবে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের এবং আশপাশের অতি ঘনিষ্ঠজনদের সম্পদ সবে চাউর হতে শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে হাসিনা পরিবারের অবিশ্বাস্য সম্পদের ফিরিস্তি শুনে সবাই বিস্মিত হন।

অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই তার বক্তৃতায় নীতিকথার নানা বাণী শোনাতেন। যার সঙ্গে এখন বাস্তবতার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকারান্তরে শেখ হাসিনার এসব বক্তব্যের আড়ালে ছিল প্রচণ্ড ধূর্তামি ও প্রতারণা। মানুষকে বোকা বানানোতে তিনি পটু ছিলেন। ফলে খুব বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে রসিয়ে রসিয়ে তিনি এসব কথা বলতেন। অনেক সময় কথার সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষা যুক্ত করে প্রলুব্ধ করতেন সাধারণ মানুষকে। এসব কথার মারপ্যাঁচ এবং উন্নয়ন ফিরিস্তির আড়ালে তিনি ছিলেন মূলত আপাদমস্তক দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিস্ট।

শেখ হাসিনা প্রায় বলতেন-দেশে ও দেশের বাইরে তার কোনো সম্পদ নেই। শেষ জীবনেও তিনি ঢাকা ছেড়ে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে থাকতে চান। তবে এসব মিষ্টি কথায় সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে পারলেও বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ঠিকই তার এসব ভণ্ডামি বুঝতে পেরেছিল। শিক্ষিত-সচেতন মানুষও তার ভণ্ডামি বুঝতে পারতেন। ফলে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর একে একে শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও আশপাশের মানুষের নামে যখন দেশ-বিদেশে থাকা বিশাল সম্পদের তথ্য সামনে আসছে, তখন তারা অন্তত অবাক হচ্ছেন না। তবে এতটা সম্পদ করে ফেলছেন তা ছিল অনেকের কাছে কল্পনাতীত। মূলত বাস্তবতা হলো-তিনি ও তার পরিবার ক্ষমতায় গিয়ে যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছিলেন। ফলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি করে দেশে ও বিদেশে গড়েছেন অঢেল সম্পদ। অথচ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সব সময় তিনি সততার বুলি আওড়াতেন।

জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, এটা ক্ষমতার জবাবদিহিহীন অপব্যবহার, দুর্নীতি ও প্রতারণানির্ভর চোরতন্ত্রের দৃষ্টান্ত। এই বিষয়গুলো আমরা তখনই জেনেছি বা জানা গেছে। কিন্তু এভাবে হয়তো সামনে আসেনি। প্রচার হয়নি। ক্ষমতার একচ্ছত্র অপব্যবহার করে গড়ে তোলা বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য গোপন রাখতে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এমনকি তার (শেখ হাসিনার) এসব অপকর্ম জাস্টিফাই করার জন্য তিনি বিভিন্ন ধরনের যুক্তিও তুলে ধরতেন। যার সবই ছিল জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।

একই বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ-উর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ২০১৮ সালের রাতের ভোটের পর থেকে আমি আর আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দলই মনে করি না। তারা একটা গ্যাং অব ক্রিমিনালসে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা সেই ক্রিমিনালদের নেতা ছিলেন। ফলে তিনি যখন এসব কথা বলেছেন, এগুলো আমরা বিশ্বাস করতাম না। এগুলো শুনতাম আর হাসতাম। কারণ যে সরকারের ছোটখাটো লোকজন অকল্পনীয় পরিমাণ সম্পদ গড়েছে, যার পিয়ন চারশ কোটির মালিক, ফলে সেই মানুষটার পরিবারে কী থাকতে পারে সেটা আমরা ঠিকই বুঝতাম। এখন সেগুলোর প্রমাণ বা ডকুমেন্টগুলো পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, তবে আমি মনে করি-এখনো তেমন কিছুই (শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সম্পদ) খুঁজে পাওয়া যায়নি। তদন্ত করলে ধীরে ধীরে আরও অনেক কিছু পাওয়া যাবে। তবে বেনামে থাকার কারণেও সব কিছু পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে গণভবনে ২৫ জুন (২০২৪) সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এটাই ছিল তার শেষ সংবাদ সম্মেলন। ওইদিনও বিভিন্ন বিষয়ে তিনি যথারীতি বক্তৃতাবাজি করেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারও সঙ্গে জেলাসি করে না। শেখ হাসিনা জাতির পিতার মেয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে, অন্তত এই জায়গাটায় কেউ আসতে পারবে না। সেটাই আমার গর্ব। প্রধানমন্ত্রী এটা তো সাময়িক ব্যাপার। আমি শেখ মুজিবের মেয়ে। আমি দেশও বেচি না। দেশের স্বার্থও বেচি না। দেশের স্বার্থ রক্ষা করেই চলি। তার জন্য আগে একবার ক্ষমতায় আসতেও পারিনি। কিন্তু আমার কিচ্ছু আসে যায় না। আমি এর-ওর কাছে ধরনা দিয়ে বেড়াই না।’

এদিন শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কিছু মানুষ তো লোভী হয়ে যায়। টাকা-পয়সার লোভ এত বেড়ে যায় যে দেশ রেখে বিদেশে রাখতে গিয়ে শেষে দেশ ছেড়েই ভাগতে হয়। তা সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো? এতই অর্থ বানিয়ে ফেলল যে, শেষে আর দেশেই থাকা যায় না। তাহলে অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো? এটা তো মানুষ চিন্তা করে না। বোধহয় নেশার মতো পেয়ে যায়।’

এছাড়া বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর তিনি ২০৪১ বা ২১০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কী কী করবে- সেসব পরিকল্পনার বয়ান দিতেন। এ সময় নিজের অভিলাষ তুলে ধরে শেখ হাসিনা জনগণের কাছ থেকে বাহাবা নিতে চাইতেন।

টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকাকালীন বারবার নিজেকে দেশের সবচেয়ে ‘জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা’ দাবি করতেন। গণ-অভ্যুত্থানে পতনের পর পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন আগে ২২ জুলাই নিজ কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে হাসিনা বলেছিলেন, ‘আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনা পালায়নি, পালায় না।’ এর আগে চীন সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনেও তিনি বলেছিলেন, ‘অনেকেই বলেছে প্রধানমন্ত্রী পালিয়েছে, শেখ হাসিনা পালায় না।’ ১ আগস্টও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যেও শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে না যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।

এদিকে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও আশপাশের মানুষের নামে এখন গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে দেশ-বিদেশে বিশাল অঙ্কের সম্পদের তথ্য সামনে আসছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তথ্যমতে, সংস্থাটি শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জব্দ করা ১২৪ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬৩৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা পেয়েছে। এছাড়া ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা দলিলমূল্যে রাজউকের ৬০ কাঠা প্লট এবং ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জমিসহ আটটি ফ্ল্যাট অবরুদ্ধ করা হয়েছে। অপরদিকে শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

এছাড়া মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাশিয়ান ‘স্নাশ ফান্ড’-এর অস্তিত্বও মিলেছে। হাসিনা পরিবার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের হওয়া ৬টি মামলার তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং পরিবারের ৭ সদস্যকে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তাদের সন্তানদের নামে এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান মিলে মোট প্রায় ৫৮৭ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে তাদের নামে মোট ১২৪টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৫৭৮ কোটি টাকা অবরুদ্ধ এবং সুধা সদনসহ ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বাড়ি ও জমি ক্রোক করা হয়েছে।

গাজীপুরে একের পর এক রিসোর্ট ও বাগানবাড়ির সন্ধান মিলছে শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা পরিবারের সদস্যদের। বিভিন্ন সময়ে কেনা এসব রিসোর্ট ও বাগানবাড়ি করা হয় অবসর সময় কাটানোর জন্য। সরকার পতনের পর কয়েকটি রিসোর্ট ও বাগানবাড়িতে বিক্ষুব্ধ মানুষের হামলার ঘটনাও ঘটে। যুক্তরাজ্যে রেহানাকন্যা টিউলিপের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ ওঠা এবং তার পদত্যাগের পর দেশেও রেহানা পরিবারের সদস্যদের সম্পদের খোঁজ শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য মিলেছে। দুদকের তদন্ত কমিটি হয়েছে ডিসেম্বরে। মাত্র চার মাসের তদন্তে এত সম্পদের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আরও তদন্ত করলে এর চেয়ে কয়েকগুণ সম্পদের তথ্য সামনে আসবে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ঢাবি ছাত্র ও তার মাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত!

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বখাটে মাকে বিশেষ অঙ্গ দেখানোর প্রতিবাদ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও তার মাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত বখাটে মাদকসেবী ছাত্রলীগ কর্মী। গুরুতর আহত অবস্থায় ছেলে ও মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের দিঘীবালী গ্রামে মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দিলীপ হালদারের ঘরের পাশের কচুগাছ কাটতে যান মনোরঞ্জন হালদার।

এ ঘটনায় প্রতিবাদ করেন দিলীপের মা গীতা রানী হালদার। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে গীতা রানী হালদারকে তার পুরুষাঙ্গ দেখান মনোরঞ্জন হালদারের ছেলে মাদকসেবী ছাত্রলীগ কর্মী মিঠুন হালদার।

মাকে পুরুষাঙ্গ দেখানোর প্রতিবাদ করতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দিলীপ হালদারকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাদকসেবী ছাত্রলীগ কর্মী মিঠুন হালদার কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

ছেলেকে বাঁচাতে গেলে মা গীতা রানী হালদারকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মিঠুন ও তার পরিবারের লোকজন। গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

কুপিয়ে আহত করার কথা অস্বীকার করে মিঠুনের পিতা মনোরঞ্জন হালদার বলেন, ঘরের পাশের কচুগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে। আমি ও আমার স্ত্রীও আহত হয়েছি।

এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুশংকর মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।