এই সুযোগ হাতছাড়া হলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

কিছু সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে বলে মনে করেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়ে সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি এখন কিছু সংস্কার করতে না পারি, তাহলে আর সম্ভব না। যদি আমরা কিছু সংস্কার না করি তাহলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় হবে।’

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট হতেই হবে।’

রাজনৈতিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে সংস্কার লাগবে। একটা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কিছু উদ্যোগ নিচ্ছেন, কিন্ত তা পর্যাপ্ত নয়। রাজনৈতিক দলগুলো এখনও বিতর্কিত ব্যবসায়ীদের টাকায় চলে।’

সচিবালয়ে আগুনের বিষয়ে এবার মুখ খুললো আ.লীগ

রাজনৈতিকভাবে প্ররোচিত সরকার শেখ হাসিনাকে ফাঁসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন,আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অজ্ঞাত স্থান থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি।

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল তারই অংশ হিসেবে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড সংগঠিত করা হয়েছে। লাগামহীন দুর্নীতির প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করতে এমন নীল নকশা কিনা আমরা জাতির কাছে সেই প্রশ্ন রাখছি।

মূলত এর মধ্যে সরকারের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের ভূত দেখার মতো দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরকারের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা সচিবালয়ের ভিডিও ফুটেজ জাতির সামনে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি। নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানাচ্ছি।

এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কেউ মুছে ফেলতে পারবে না উল্লেখ করে নানক বলেন, ‘বৃথা চেষ্টা না করে জনদুর্ভোগ কমান। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। সব হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ বিচার করুন।

তিনি বলেন, ‘যেখানে সেখানে মবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হত্যা করার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর শিক্ষা জীবন আজ বিপন্ন। ছাত্রলীগ করার কারণে তাদের পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।

বিনা কারণে যাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের স্বপদে বহাল করতে হবে। ইজতেমা ময়দানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জাতি জানতে চায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে আবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ওরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দিতে চায়।

আমাদের আর বসে থাকার সুযোগ নেই। আসুন প্রতিবাদ করি, প্রতিরোধ করি। ওরা দেশ প্রেমিক নয়, ওরা জাতির পিতা মানে না।’ ‘আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।

পুড়িয়ে ফেলার জন্য যাওয়ার পথে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুই ট্রাক নথি আটকে দিলো জনতা

বরিশালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুই ট্রাক পুরাতন নথি আটকে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। আগুনে পুড়িয়ে ফেলার জন্য ওই নথি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ভাগাড়ে না নিয়ে নদীর পাড়ে কেন নিচ্ছিলো, এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয়। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৭টার দিকে বরিশাল নগরীর পাশে সদর উপজেলার চরবারিয়া ইউনিয়নের

কাগাসুরা বাজারে ওই ট্রাক দুটি আটক করে জনতা।স্থানীয়রা জানায়, গতকাল সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে। আজ যখন দুই ট্রাক বোঝাই পুরাতন নথি এই এলাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনই সবার মনে সন্দেহ জাগে। বাজারের মধ্যদিয়ে এতো কাগজ এর আগে কখনো নদীর ধারে নিতে দেখেনি কেউ।

ট্রাক আটক করার পর গাড়ির চালক এগুলো সরকারি নথি এবং পোড়ানো হবে জানালে জনতা পুলিশে খবর দেয়। ট্রাক চালক জানান, তারা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এসব নথি নিয়ে এসেছেন। ওই দপ্তরের লোকজনই তাদের ট্রাকে মালামাল উঠিয়ে দিয়েছে। বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৯২ সালের

পর থেকে জমা হওয়া বিভিন্ন সিডিউলের ফটোকপি অফিসে জমা হয়েছিল। রুম খালি করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে নথিগুলো পুড়িয়ে ফেলার জন্য ময়লার ভাগাড়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো ভাগাড়ে না নিয়ে ভাড়াটে শ্রমিকরা বিক্রির উদ্দেশ্যে অন্য কোথাও নিয়ে যায়। পরে জনতা আটক করলে পুলিশের সহায়তায় আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন পুরাতন মালামাল নিলামে বিক্রির নিয়ম থাকলেও নথি নিলামে বিক্রির নিয়ম নেই। এগুলো পুড়িয়ে ফেলতে হয়।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্বাচনে অংশ নিতে সুযোগ হারাবেন ‘হাসিনা’

আগামীতে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ মুখ্য নয়। জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায়ে দণ্ডিত হলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান। শুক্রবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন। অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন,

শেখ হাসিনার নির্মম পরিণামের পরে তার পাশে দলের কেউ দাঁড়াতে সাহস পাচ্ছে না। যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধংস করেছিল, সংবিধান কেটে ছিঁড়ে মানুষের অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করেছে তারা ইতিহাসের খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, ইতিহাসের

আঁস্তাকুরে নিক্ষিপ্ত হয়ে তারা বিচারের মাধ্যমে কারাগারে যাবে। জুলাই বিপ্লবে শহিদরা ইতিহাসের মহানায়ক হয়ে থাকবেন। এই বিপ্লব হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে। এ বিপ্লবের অর্জন ধ্বংসের চেষ্টা চলছে।

কোনো ষড়যন্ত্রকারী এ অর্জনকে নস্যাৎ করতে পারবে না। বিপ্লবীরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিল।

তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে কুমিল্লা থেকে হেলিকপ্টারে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে ঢাকায় এনে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করার ধারাবাহিকতায় বিগত ৩টি নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছিল। এসব নির্বাচনকে যারা কলঙ্কিত করেছিল তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে চিরদিন ক্ষমতায় রাখার

অসৎ উদ্দেশে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার রায় জালিয়াতির দায়ে খায়রুল হকের গ্রেফতার ও বিচার সময়ের দাবি। এ দেশে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে

নিয়েছিল পতিত আওয়ামী সরকার। আমি—ডামি, একতরফা ও মধ্যরাতের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। গত তিনটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ, রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ

নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সবাই জাল জালিয়াতির অপরাধে অপরাধী ছিল। যারা এসব নির্বাচনি অপরাধ করেছে তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শপথ ভঙ্গ করে যেসব নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনি

অপরাধে জড়িত ছিলেন তাদের বিচার কী প্রক্রিয়ায় হবে তা নিয়ে সরকারকে গুরুত্বসহকারে চিন্তাভাবনা করা উচিত। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের আমলে আরপিওতে সংশোধনী এনে ভোট বন্ধে ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল।

এই ক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হবে। কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের বিরুদ্ধে জাতীয় নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতিকে সেই অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যৎ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন— ১. বিগত নির্বাচনকে যারা

বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সেই নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনি অপরাধে যুক্ত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নেওয়া।

২. সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অসাদাচরণ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করা। ৩. শুধুমাত্র ভোটের দিন নয়, আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে যাতে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনি পরিবেশ না থাকলে ইসিকে যে

কোনো সময় ভোট বন্ধ কারার এখতিয়ার ফিরিয়ে আনা। ৪. নির্বাচনকালীন সন্ত্রাস, ভীতি সঞ্চার, বা অন্য কোনো ধরনের নির্বাচনি অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া। ৫. দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরাসহ

ঋণখেলাপিরা কোনোভাবেই যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য কঠিন আইনের বিধান রাখা। ৬. আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া। ৭. যেসব আইনের

কারণে নির্বাচনকালীন গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশনে বাধার সম্মুখীন হতে পারে সেই সব আইন বাতিল করা। ৮. সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোসহ নাগরিক সংগঠনের সঙ্গে এজেন্ডাভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা। ৯. অর্ন্তভুক্তিমূলক নির্বাচনের স্বার্থে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধের উপায় বের করা।

১০. নির্বাচন কমিশনকে সব মতভেদের ঊর্ধ্বে থেকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকা এবং কোনো চাপের কাছে মাথা নত না করা।

‘অতীতের নির্বাচনি অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হলে ভবিষ্যৎ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করা যাবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক একরামুল হক সায়েম, সাংবাদিক সাইদুর রহমান ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন।

একদল চাঁদাবাজি করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, আরেকদল করুক চাই না : জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, একদল চাঁদাবাজি করে পালিয়েছে, আরেকদল চাঁদাবাজি করুক তা চাই না। তিনি চাঁদাবাজির মতো ঘৃণিত কাজ না করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।

আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে জামায়াতের আমির যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে আয়োজিত দলীয় কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এই মন্তব্য করেন। দলের যশোর জেলা শাখা এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি-অপশাসনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে দেশ দুঃশাসন ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল। আওয়ামী লীগের ইতিহাসই হলো দুঃশাসন আর দুর্নীতির।’

তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি ৫ আগস্টে ফ্যাসিবাদী রেজিম শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের সন্তানরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে তা দেখিয়ে দিয়েছে। রংপুরে আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে পুলিশের বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়েছিল।

তার ভরসা ছিল, দেশের পুলিশ তার বুকে গুলি চালাবে না। কিন্তু পুলিশ গুলি করে তার বুক ঝাঁঝরা করে দিয়েছে।’ প্রায় দুই হাজার মানুষের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি না করতে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।

ডা. শফিক বিগত সরকারের সময় জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে দাবি করে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার অধিকার সবার আছে। কিন্তু কোনো ভুয়া মামলা করবেন না।

নিরীহ কোনো মানুষকে হয়রানি করবেন না।’ ‘বিগত সরকার শিক্ষার সর্বনাশ করে গেছে’ উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা সুযোগ পেলে সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ গড়ার চেষ্টা করব।

আমরা এমন শিক্ষা উপহার দিতে চাই, যেখানে মানুষ সার্টিফিকেটের পাশাপাশি কাজও পাবে। দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। ব্যাংক, ব্যবসা স্থবির।

অন্তর্বর্তী সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হচ্ছে। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি।’ ‘দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই’ মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সবাই এই দেশের নাগরিক।

এখানে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে বসবাস করব।’ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বড়ি বিক্রি করবেন না। অনেক করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন ১৬ ডিসেম্বরকে তাদের বিজয় দিবস হিসেবে বর্ণনা করেন, তখন কোথায় থাকে আপনার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? একবার তো প্রতিবাদও করেন না। আমরা কিন্তু প্রতিবাদ করেছি।’

শফিকুর রহমান ‘ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সাম্য ও ইনসাফের বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘তবে আমরা কোনো সাম্রাজ্যবাদী প্রভুকে মেনে নেব না।

তিনি লড়াইয়ে শহীদ পরিবারগুলোর পাশে থাকার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়, সুশাসন কায়েম করাই উদ্দেশ্য। আমরা এমন একটি দেশ দেখতে চাই, যেখানে চাঁদাবাজ থাকবে না।

কোর্ট-কাছারিতে দুর্নীতিবাজরা থাকবে না। সবার কাজের মূল্যায়ন হবে। কোনো হানাহানি নয়, একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হবে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। সমাজে ইনসাফ কায়েম হবে।’

কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের যশোর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, মাওলানা আজীজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির

অধ্যাপক আলী আযম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমীন, মাগুরা জেলা আমির এম বি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল জব্বার, ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ,

যশোর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর পূর্ব জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আব্দুল আজিজ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

সম্মেলনে বিপুল মানুষের সমাগম ঘটে। কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ছাড়িয়ে লোকজন ছড়িয়ে পড়ে পাশের মুজিব সড়ক, মুনসী মেহেরউল্লা সড়ক, আদালত চত্বরে।

পানির ট্যাংকে লুকিয়ে ছিলেন আ. লীগের সেই ভাইরাল নেত্রী ‘কাবেরী’

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থেকে আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরীকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে থানার দেবপাহাড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় আটক এড়াতে ওই এলাকার একটি ভবনের ছাদে থাকা পানির ট্যাংকে লুকিয়েছিলেন তিনি।

কাবেরী কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা বিষয়ে ভিডিও আপলোড করতেন তিনি।

আলোচিত-সমালোচিত এই নেত্রী ফেসবুকে ভাইরাল ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কক্সবাজারের একাধিক আসন থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন।

তিনি কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের ছোট বোন। বিষয়টি নিশ্চিত করে চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির বলেন,

আওয়ামী লীগ নেত্রী কাবেরীকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আটক করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে চকবাজার থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, কাবেরীকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে। সেখানের কোনো একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।

সরকারের তিন উপদেষ্টাকে হুশিয়ারি করে যা বললেন ‘সারজিস আলম’

অন্তর্বর্তী সরকারের তিন তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে বিপ্লবী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে বললেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মূখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম এই নেতা লিখেছেন, সাবধান করার সময় আর নাই। নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম ভাই, বিপ্লবী ভূমিকায় অবতীর্ণ হোন। পুরো বাংলাদেশে আপনাদের সঙ্গে আছে। সারজিস আলম লিখেছেন, রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে সবার আগে আমলাতন্ত্র ও প্রশাসনে যেসব চাটার দল এখনো ঘাপটি মেরে লুকিয়ে

আছে তাদের শেকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হবে।  বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের যারা চাটার দল ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম স্টেকহোল্ডার ছিল আমলাদের বৃহৎ একটা অংশ, এমন দাবি করে সারজিস বলেন,

এদের উপর ভর দিয়েই হাসিনা এ দেশে তার ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিল। যখনই বিপ্লবীরা হাসিনার অপকর্ম, চুরি, লুটপাট, দুর্নীতির দিকে নজর দিয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে,

তখনই সচিবালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা হাসিনার দালালেরা বিভিন্ন অপকর্মের ফাইলগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে দিল। প্রসঙ্গত, বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।

আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করেন

পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। এরপর সচিবালয় এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

জুলাই-আগস্ট ‘আন্দোলনে আশুলিয়ায় একজনকে জীবিত পুড়িয়ে মেরেছে পুলিশ’

জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় একজনকে জীবিত পুড়িয়ে মেরেছে পুলিশ বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত ছয় শিক্ষার্থীর মরদেহ পেট্রল ঢেলে পোড়ানো হয়। এদের মধ্যে একজন জীবিত ছিল। জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রল লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি একথা বলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টের নৃশংসতম ঘটনাগুলো নিয়ে তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন টিম খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। বর্বরতম ঘটনাগুলোকে আমরা প্রায়োরিটি দিচ্ছি।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমাদের তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে বের করেন যে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয়জন ছাত্রকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে। পরে লাশগুলোকে ভ্যানগাড়ির ওপর একটার পর একটা রেখে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পরে এ লাশগুলোকে আরেকটি পুলিশভ্যানের ওপর ছুড়ে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল। সেই সরকারের পক্ষে তারা সর্বোচ্চ নৃশংসতম আচরণ করেছিল।

তিনি বলেন, পুলিশভ্যানে উঠিয়ে সেই লাশগুলোর ওপর পেট্রল ঢেলে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে আগুন লাগানো হয়। এ ঘটনায় আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, লাশগুলোকে পুড়িয়ে ফেলার জন্য আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাজুল বলেন, এদের মধ্যে একজন জীবিত ছিল। জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রল লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

‘এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী ঘটিয়েছে। নৃশংসতার প্রমাণ এটা’—যোগ করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি আরও বলেন, এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে যে ব্যক্তি বা যারাই জড়িত ছিল তাদের মধ্যে দুজনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে একজন হচ্ছে মুকুল চকদার।

তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা আদালতে ওয়ারেন্ট চেয়েছিলাম। আদালত ওরেন্ট জারি করেছিল। সে অনুযায়ী গতকালকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় আরও একজন পুলিশ সদস্য মালেককে গতকাল কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হয়েছে। যেহেতু গতকাল ছুটি ছিল এজন্য তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ওখানকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।

মালেক এখন কিশোরগঞ্জে আটক আছেন জানিয়ে তাজুল বলেন, তার মামলার নথি যথাযথভাবে ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। তাকে এ মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হবে। তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন টিম মিলে আমরা কাজ করছি। খুব দ্রুতই আমরা এ তদন্ত গুছিয়ে আনব এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।

আমরা খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া করতে পারব।

দুই দুইবার বোরখা পরে পালিয়েছে নারায়ণগঞ্জের ‘শামীম ওসমান’

বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে বলে দাবি করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। আজ বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নে মহান

মুক্তিযুদ্ধে ও ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। গণঅধিকার পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা শাখার উদ্যোগে এই দোয়া ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ গণহত্যার মাস্টারমাইন্ডরা কিভাবে পালাল? এসবের তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে সরকারকে। এদের পলায়নে সহায়তাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সভায় রাশেদ খান বলেন, নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত শামীম ওসমান দুই দুইবার বোরখা পরে পালিয়েছে। এরা নারায়ণগঞ্জের ত্রাস ছিল। নারায়ণগঞ্জের বিপ্লবী জনতা এদের লাথি মেরে বিতাড়িত করেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বাংলাদেশকে নিজেদের দেশ

মনে করে না, এদের আসল দেশ হলো ভারত। কিন্তু সেই ভারতও এদের রক্ষা করতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই এদের পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। গণ অধিকার পরিষদের এই শীর্ষ নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন,

কেন এখনো আওয়ামী লীগের অপরাধী, হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? ৩০০ ডামি এমপির বিষয়ে সরকারের অবস্থান কি? কেন এখনও তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দুদকের মাধ্যমে পাকড়াও করা হচ্ছে না?

দ্রুত নির্বাচন না দিলে মাঠে নামব বলে হুঙ্কার দিলেন বিএনপির নেতা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ না হলে বাংলাদেশ নামে কোনো দেশ সৃষ্টি হত না। মুক্তিযুদ্ধের পেট থেকেই বাংলাদেশ বের হয়েছে। যারা বাংলাদেশ মানে না,

মুক্তিযুদ্ধ যারা মানে না, তারা বাংলাদেশের মানুষ না। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হাজার বছরে বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা ইটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিজয়ের মাস

উপলক্ষে আয়োজিত বিজয় উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে ফজলুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের আয়ু যদি পাঁচ বছর হয়, অনির্বাচিত

সরকারের আয়ু তিন থেকে ছয় মাস হতে পারে। ইলেকশনের কথা কইলে মুখ কালা করেন কেন? যদি আপনারা নির্বাচন করতে চান, দল করেন—আপনাদের অভিনন্দন জানাবো। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন হবে।

আমরা নির্বাচনের জন্য অনন্তকাল অপেক্ষা করব না। দ্রুত নির্বাচন দিন, নইলে নির্বাচন আদায়ে মাঠে নামব আমরা।’
দেশে এবারের বিজয় দিবসে উৎসব বা বিজয় মেলা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি এই নেতা বলেন, ‘

এবার তো বিজয়ের আনন্দ বেশি হওয়ার কথা ছিল। এত নীরবে-নিভৃতে কেন বিজয়ের মাস চলে যাবে? এটা আমি সহ্য করিনি, মুক্তিযোদ্ধারা সহ্য করেনি, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা সহ্য করেনি।

জিয়াউর রহমানের সৈনিকেরাও সহ্য করেনি। এ কারণে হাওরে এই বিজয় উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে দেশের সর্বনাশ করেছেন, নিজের সর্বনাশ

করেছেন, তার পিতাকে ডুবিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। গত ১৫ বছর দেশে কোনো মানুষের শাসন ছিল না। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু বীর প্রতীককে জুতার মালা

পরিয়ে লাঞ্ছনার প্রসঙ্গে দুঃখপ্রকাশ করে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি জানি না আমার মৃত্যুর আগে আর কী কী দেখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী দলের লোকেরাই এ অপকর্মটি করেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে একাত্তরে সাড়ে সাত কোটি

মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছেন। ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছেন। ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমান অবদান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা

দিয়েছিলেন। যারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক মানে না, তারা স্বাধীনতা মানে কি-না আমার সন্দেহ রয়েছে। তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না, তিনি রণাঙ্গন থেকে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’

বিজয় উৎসবে জেলার তিন হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের ৭২জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাদের ক্রেস্ট ও ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। আলোচনা পর্ব শেষে রাতে উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্বে কণ্ঠশিল্পী সালমা,

আশিক ও শাহনাজ বাবুসহ স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। মধ্যরাত পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ তাদের পরিবেশনা উপভোগ করেন। ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিজয় উৎসবের

আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা ও অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া ও আমিনুল ইসলাম আশফাক।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- ইটনা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সহসভাপতি মো. মনির উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তারিকুল ইসলাম জুয়েল,

মিঠামইন উপজেলা বিএনপি সভাপতি জাহিদুল আলম জাহাঙ্গীর, অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপি সভাপতি সৈয়দ সাঈদ আহমেদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি জেসমিন সুলতানা কবিতা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু নাসের সুমন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা হাফিজুল্লাহ হীরা প্রমুখ।