যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু, অভিযোগ প্রমানিত হলে হবে যে বিচার!

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তদন্তে নাম এসেছে শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার

পার্টির মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকেরও। সম্প্রতি লন্ডনের কেবিনেট মিনিস্টার অফিস থেকে টিউলিপ সিদ্দিককে অনানুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং সেখান থেকে বলা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে টিউলিপ সিদ্দিক এই

বিষয়ের সাথে জড়িত নেই। তার রাশিয়া সফর ছিল পারিবারিক সফর। এক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের সাথে কোন সম্পর্ক ছিল না। আরও বলা হয়, কেবিনেট মিনিস্টার যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এটা অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও যদি এই বিষয়ে টিউলিপ

সিদ্দিকীর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে যদি তার কোন অপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী তার সাজা হবে।

এদিকে টিউলিপ সিদ্দিকী বারবার বলেছেন, তার সাথে অর্থ আত্মসাতের কোন সম্পৃক্ততা নেই। যুক্তরাজ্যের আওয়ামী লীগ থেকে বলা হয়েছে এ বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আওয়ামী লীগকে হেয় করার জন্য অথবা শেখ

হাসিনা পরিবারকে ছোট করার জন্য এটা করা হচ্ছে। বৃটেনের এন্টি করপশন যে তদন্তটি করছে যদি এই তদন্তে কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা পায় ব্রিটিশ সরকার তাহলে ব্রিটিশ সরকার তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সাথে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন, যেখানে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিল।

মূলত টিউলিপ সিদ্দিকের খালা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন যে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে তারই আওতায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

ভারতের পার্লামেন্টের ফিলিস্তিনপন্থী স্লোগান

ভারতের স্থানীয় একটি আদালত সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান এবং লোকসভার সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সংসদে ‘ফিলিস্তিনপন্থী’ স্লোগান দেওয়ায় সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, আইনজীবী বীরেন্দ্র গুপ্তা অভিযোগ করেন, আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের সময় ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগান দেন। যা সংবিধান এবং আইনগত মূল্যবোধের পরিপন্থী। এই স্লোগান তার অনুভূতিতে আঘাত করেছে বলে দাবি করেন গুপ্তা।

এ বিষয়ে প্রথমে জুলাই মাসে এমপি বা এমএলএ আদালতে পিটিশন জমা দেওয়া হলেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে জেলা আদালতে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হলে জেলা বিচারক সুধীর পিটিশন গ্রহণ করে আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে ৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

গত ২৫ জুন হায়দরাবাদ থেকে এমপি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ওয়াইসি। শপথ শেষে তিনি “জয় ভীম, জয় মীম, জয় তেলেঙ্গানা, জয় ফিলিস্তিন” স্লোগান দেন, যা সংসদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে বক্তব্যের রেকর্ড থেকে মুছে ফেলা হয়। এ সময় ওয়াইসি দাবি করেন, তার স্লোগান সবসময় শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে। ‘জয় ভীম’ স্লোগান ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থনের প্রতীক।

ভারতের আসামে নারী-শিশুসহ ১৬ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম থেকে ১৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন। আসামের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সেন্টিনেল আসাম বলেছে, ভারত-বাংলাদেশ

সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ১৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আসাম পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী এবং ৫ শিশু রয়েছে।

আসামের পুলিশ বলেছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা বেঙ্গালুরু থেকে আসামের গুয়াহাটি হয়ে দক্ষিণ সালমারার মানকাচরে গিয়েছিলেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা বাংলাদেশি নাগরিক বলে স্বীকার করেছেন।এক্সে দেওয়া পোস্টে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন,

রাজ্যের সালমারা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ১৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। তারা বেঙ্গালুরু থেকে গুয়াহাটি রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রা করে দক্ষিণ সালমারার মানকাচার জেলায় পৌঁছান। পরে সালমারা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

তিনি বলেন, তদন্তে গ্রেপ্তারকৃতরা বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তারকৃতদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে আসাম পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা হলেন, মো. মেহেদী হাসান, চাঁদ মিয়া, রুমানা আক্তার, মো. রিজওয়ান হাওলাদার, জামাল শেখ, বিউটি বেগম, মুন্নি বেগম, নুসরাত জাহান, রুস্তম শেখ, রুবেল কুরেশী এবং পাঁচ শিশু।

এর আগে, গত সপ্তাহে আসাম পুলিশ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে। আসমা আক্তার নামের ওই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বন্দি বিনিময় চিঠি পেয়ে যা বললেন সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত

শিক্ষার্থী-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তাকে ফেরত দিতে ইতোমধ্যে নয়াদিল্লিকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা, নয়াদিল্লি সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকারও করেছে। গণআন্দোলন দমনে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মানুষ হত্যার নির্দেশ প্রদানের অভিযোগে ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সারা দেশে শতাধিক মামলা হয়েছে।

তিনি দেশে ফিরে এলেই তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একাধিকবার প্রকাশ্যে এই ঘোষণা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাসিনা কী করতে পারেন— সে সম্পর্কিত পরামর্শ তাকে দিয়েছেন বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত মহেশ সাচদেব। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাচদেব বলেন,

“বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিটি রয়েছে, সেটি অনেক সতর্কভাবে করা। এ চুক্তিটি রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রত্যপর্ণ প্রত্যাখ্যান করে, কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে ফোকাস করে। তো, এখন চুক্তির এসব সতর্কতা ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির বর্তমান সরকারের প্রত্যর্পণের অনুরোধের বিরুদ্ধে ভারতের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।

আদালতে তিনি লিখিতভাবে আবেদন জানাতে পারেন যে, ভারতের সরকার তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হবে।” “আবার ভারত বাংলাদেশের সরকারকে জানাতে পারে যে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো হলে তার সঙ্গে ন্যায়বিচার হবে কি না— সে সম্পর্কে নিশ্চিত নয় তারা। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে ভারতের অনেক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আছে এবং

নয়াদিল্লির বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে ইউরোপ বলেছে, ভারতের বিচার ব্যবস্থা ও কারাগারগুলোর মান নিয়ে তাদের সংশয় রয়েছে। তো এখন এ পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।” বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রথম খসড়া ‍চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৩ সালে। পরে ২০১৬ সালে চুক্তিটির সংশোধিত সংস্করণে স্বাক্ষর করে নয়াদিল্লি এবং ঢাকা।

মূলত দুই দেশের সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদে সংশ্লিষ্টদের বিনিময়ের উদ্দেশ্যেই চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিল ভারত এবং বাংলাদেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক নোট প্রদান করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই নোট গ্রহণ করেছে বলে গতকাল সোমবার জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে মহেশ সাচদেব বলেন, “প্রথমত, কূটনৈতিক নোট হলো দুই দেশের সরকারের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ের যোগাযোগ মাধ্যম। এটি কেবল একটা নথিগত রেকর্ড। এটা অনেকটা এমন…মনে করুন আপনি অন্য কোনো দেশে কোনো সঙ্গিত কনসার্ট বা টুর্নামেন্ট উপভোগ করতে গেছেন, সেখানে হয়তো কোনো কিছু আপনার ভালো লাগল না এবং সেই ভালো না লাগার ব্যাপারটি আপনি সেই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানালেন। দুই দেশের সরকারের যোগাযোগের জন্য এর চেয়ে উচ্চতর অনেক পন্থা বা মাধ্যম রয়েছে।”

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পুরোভাগে রয়েছে শেখ হাসিনার অবস্থান। প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্যও ব্যাপারটি অস্বস্তিকর। তবে মহেশ সাচদেব মনে করেন, বাংলাদেশ যদি অপেক্ষাকৃত উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক পন্থা অনুসরণ করে শেখ হাসিনাকে ফেরত চায়, তাহলেও কিছু অনতিক্রম্য কূটনৈতিক জটিলতার কারণে ভারতের পক্ষে সেই অনুরোধ রাখা কঠিন হবে।

“কিছুদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন। আমার ধারণা, তার সেই সফরে এ ব্যাপারগুলো আলোচনা হয়েছে। তারপরও আমি বলছি— বাংলাদেশ যে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইছে— এটা তো নতুন নয়, গত আগস্টে বাংলাদেশে সরকার পতন এবং নতুন সরকার গঠনের পর থেকে দু’দেশের মধ্যেই ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখানে যে ব্যাপারটি লক্ষ্যনীয়, তা হলো শেখ হাসিনার ভারতে আসার

অনুমতি চেয়েছিল বাংলাদেশের তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে। অর্থাৎ, দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে তিনি এসেছিলেন। আমার মনে হয় যে বাংলাদেশের সরকারে বর্তমানে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা তাদের হৃদয়ের কথা শুনতে ইচ্ছুক নন। কারণ তারা খুব ভালো করেই জানেন যে হাসিনা এই মুহূর্তে বাংলাদেশে গেলে সেখানে চরম অরাজকতা শুরু হবে।”

ভারতে শেখ হাসিনা কতদিন অবস্থান করবেন, সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নয়াদিল্লি নেয়নি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শেখ হাসিনা, তবে এখন পর্যন্ত এই গুঞ্জনের পক্ষে নিশ্চিত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সাবেক এই ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এএনআইকে বলেন, “আমার মনে হয় তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চাইবেন। যদি তিনি আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি; আর এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। অর্থাৎ, কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আবেদন করতে হবে— এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই…অন্তত আমি যদ্দুর জানি। আর এ কথা তো আমরা সবাই জানি যে তিনি যখন

ঢাকা ছেড়ে এসেছিলেন, সে সময় তাকে অস্থায়ীভিত্তিতে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। কারণ তখন ধারণা করা হয়েছিল, শিগগিরই ভারত থেকে অন্য কোনো দেশে তিনি চলে যাবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে আবেদনও করেছিলেন, কিন্তু দু’দেশই তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। এ কারণেই তিনি এখানে রয়েছেন।”

“কিন্তু এখন যেহেতু তিনি এখানে রয়েছেন, তাকে যদি আমরা বহিষ্কার করি— সেক্ষেত্রে তা খুবই অনৈতিক একটি কাজ হবে।”

“আর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সরকারপ্রধানদের নিজ দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার ঘটনা তো নতুন কিছু নয়। এই চলতি মাসেই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ নিজ দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় গিয়েছেন এবং রাশিয়া তাকে বিনা বাক্যব্যয়ে আশ্রয় দিয়েছে। এখন পর্যন্ত মস্কো আসাদকে এ ব্যাপারে একটি প্রশ্নও করেনি।”

“আমি শুনেছি তারা (বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) হাসিনাকে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারির আবেদন করেছে। আইসিসি পরোয়ানা জারি করেও ফেলতে পারে, তবে আমাদের মনে রাখা উচিত যে পুতিন এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেও কিন্তু আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে এবং আইসিসির পরোয়ানা মাথায় নিয়েই তারা তাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।”

“আসলে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, তাতে কাগজপত্র বা নথি বড় কোনো নির্ধারকের ভূমিকায় নেই। এমন বহু ব্যাপার এখানে রয়েছে যেসব চোখে দেখা যায় না, রাডারেও ধরা পড়ে না— সেসবই এই সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের সবচেয়ে বড় নিয়ামক।”