যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণায় জানা গেছে, চাঁদ ক্রমশ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর কারণে আমাদের গ্রহের ঘূর্ণনগতিও ধীরে ধীরে কমছে। ভবিষ্যতে এভাবে চলতে থাকলে একদিনের দৈর্ঘ্য ২৪ ঘণ্টা থেকে বেড়ে ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। তবে এটি বাস্তবে ঘটতে আরও প্রায় ২০ কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, চাঁদ প্রতি বছর প্রায় ৩.৮ সেন্টিমিটার করে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। চাঁদের দূরত্ব বৃদ্ধি মহাকর্ষীয় প্রভাব সৃষ্টি করে, যা পৃথিবীর ঘূর্ণনকে ধীর করে দেয়। বিজ্ঞানী স্টিফেন মেয়ার্স বলেন, “এক সময় আসবে যখন চাঁদ একটি স্থির দূরত্বে পৌঁছাবে। তখন পৃথিবীর একপাশ থেকে চাঁদ সবসময় দেখা যাবে।”
বর্তমানে চাঁদের দূরত্ব পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। অতীতে, প্রায় ১৪০ কোটি বছর আগে চাঁদ কাছাকাছি থাকার কারণে এক দিনের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ১৮ ঘণ্টা। সেই সময় থেকে চাঁদ ধীরে ধীরে দূরে সরে যাওয়ায় পৃথিবীর দিন দীর্ঘ হচ্ছে।
চাঁদের টান এবং পৃথিবীর জড়তার কারণে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়, যা পৃথিবীর ঘূর্ণনকে ধীর করে দেয়। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, মেরু বরফ গলানো এবং মহাসাগরে পানির বৃদ্ধি ও স্থানান্তরও এই প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে।
গবেষকরা বলছেন, ৯ কোটি বছরের পুরোনো পাথরের ভূতাত্ত্বিক গঠন বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছেন, চাঁদের ধীরগতিতে দূরে সরে যাওয়াই পৃথিবীর ঘূর্ণন কমানোর অন্যতম কারণ। তবে, এই তত্ত্ব এখনও গবেষণার স্তরে রয়েছে এবং এটি মূলত একটি ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
