শেষবার হুঁশিয়ারি, উসকানি দিলেই পরমাণু হামলা

শেষবার হুঁশিয়ারি, উসকানি দিলেই পরমাণু হামলা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের তীব্রতা এখন তুঙ্গে। এর জের ধরে পোল্যান্ডের আকাশসীমা সাময়িক বন্ধ করে দেওয়াসহ বাল্টিক সাগরে ন্যাটোর উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপজুড়ে চরম সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউরোপকে কঠোর বার্তা দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাশিয়াকে উস্কানি দেওয়া হলে শীঘ্র পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।

শুক্রবার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সোচি শহরে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক ফোরামে পুতিন বলেন, ক্রেমলিন ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণের উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। তিনি অভিযোগ করেন, সব ন্যাটো দেশই এখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইউরোপের সামরিকীকরণে কঠোর বার্তা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ন্যাটো জোটের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, জার্মানির সেনাবাহিনীকে ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, “যদি কেউ সামরিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করতে চায়, তাহলে বসে থাকবে না মস্কো।”

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও সতর্ক করেন, যদি মস্কোর জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়, তবে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে পরমাণু অস্ত্র ইস্যুতেও তিনি কড়া বার্তা দিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রাম্প ও আমেরিকার অস্ত্র সহায়তা নিয়ে সমালোচনা
ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেছেন পুতিন। তিনি সতর্ক করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে ভয়াবহ মাত্রার নতুন এক উত্তেজনার অশুভ সূচনা হবে।

গত মাসে রাশিয়াকে ‘পেপার টাইগার’ বলে আখ্যা দেওয়ায় এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকেও পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন পুতিন।

পোল্যান্ডের আকাশসীমা বন্ধ, বাড়ছে আতঙ্ক
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সহ বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলার জেরে দেশটির সঙ্গে ইউরোপের উত্তেজনা বাড়ছে। সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া ও ডেনমার্কে রুশ ড্রোনের উপস্থিতির পর উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। রাশিয়া আতঙ্কের কারণে পোল্যান্ডের আকাশসীমা সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং বাল্টিক সাগরে ন্যাটোর উপস্থিতি বেড়েছে।

এরই মধ্যে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ পশ্চিমা বিশ্বকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে ঘোষণা দেন, মস্কোর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।

‘যুদ্ধের সক্ষমতা নেই ইউরোপের’: মার্কিন বিশ্লেষক
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ালে ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মনে করেন মার্কিন মেরিন কর্পসের প্রাক্তন গোয়েন্দা বিশ্লেষক এবং ইরাক বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ কমিশনের প্রাক্তন গণবিধ্বংসী অস্ত্র পরিদর্শক স্কট লিটার। তিনি মন্তব্য করেন, এই যুদ্ধে অংশগ্রহণের মতো কোনো সক্ষমতা ইউরোপের নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *