কিডনি মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নীরবে কিডনি রোগ বাসা বাঁধে, যার ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে তা শনাক্ত করা কঠিন হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে যা দেখা দিলে সতর্ক হওয়া এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার কিডনির অবস্থা ভালো না থাকলে প্রাথমিকভাবে যে তিনটি প্রধান লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে, তা হলো:
১. ক্লান্তি ও দুর্বলতা
কিডনির কাজ কমে গেলে রক্তে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ জমা হতে শুরু করে। এর ফলে মারাত্মক ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। কিডনি যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ইরাইথ্রোপোয়েটিন (Erythropoietin) হরমোন তৈরি করতে পারে না, তখন রক্তে লোহিত রক্তকণিকার ঘাটতি দেখা দেয়, যা অ্যানিমিয়া (রক্তস্বল্পতা) সৃষ্টি করে এবং রোগীর মধ্যে অস্বাভাবিক দুর্বলতা ও অবসাদ তৈরি করে।
২. ঘুম কমে যাওয়া বা ঘুমের সমস্যা
কিডনি সঠিকভাবে রক্ত পরিশোধন করতে না পারলে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থগুলো শরীর থেকে বের হতে পারে না। এই টক্সিনগুলো রক্তে থেকে যাওয়ায় ঘুমের মান প্রভাবিত হয়। এর ফলে ইনসমনিয়া বা ঘন ঘন ঘুম ভাঙার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের সঙ্গে ঘুমের সমস্যার একটি সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে।
৩. ত্বক শুষ্ক হওয়া ও চুলকানি
স্বাস্থ্যকর কিডনি রক্তকে পরিষ্কার রেখে শরীরের মিনারেল ও পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু কিডনি দুর্বল হয়ে গেলে রক্তে ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থের মাত্রা বেড়ে যায়। এই ভারসাম্যহীনতার কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, রুক্ষ এবং সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি চুলকানিযুক্ত হতে পারে। সাধারণ ত্বকের চিকিৎসায় এই ধরনের চুলকানি সাধারণত নিরাময় হয় না।
যদি আপনার মধ্যে এই লক্ষণগুলো দীর্ঘ দিন ধরে থাকে, তবে দ্রুত রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।
