বিএনপি কর্মীকে কারা খুন করল, জানা গেল

বিএনপি কর্মীকে কারা খুন করল, জানা গেল

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিএনপি কর্মী আব্দুল হাকিমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার রহস্য।

বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল। গ্রেপ্তারেরা হলেন মো. আব্দুল্লাহ খোকন (প্রকাশ ল্যাংড়া খোকন), মোহাম্মদ মারুফ, মোহাম্মদ সাকলাইন। বাকি একজনের নাম এখনো জানা যায়নি।

গত সাত অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী মডেল থানাতেই মদিনাঘাট এলাকায় বিকেলে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। এ ঘটনায় গায়ের হাওয়া হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করেছিল। ঘটনার দিন সকালে নিহত হাকিম নিজ প্রাইভেটকারযোগে হামিম এগ্রো ফার্মে যান।

বিকেলবেলা চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলযোগে তার গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাকিম গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বক্তব্য এবং স্থানীয় সূত্রের বরাতে পুলিশ জানায়, রাউজান থানাধীন বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা ও হাটহাজারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পুলিশের তৎপরতায় জিয়াউর রহমানসহ মোট চারজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতুর দিক-নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩১ অক্টোবর রাউজান থানাধীন বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহ পাড়া এলাকা থেকে মো. আব্দুল্লাহ খোকন (প্রকাশ ল্যাংড়া খোকন)-কে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে খোকন হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবং পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পরে খোকনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২ নভেম্বর রাউজান থানাধীন নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারুফ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে, যা মো. সাকলাইন হোসেনের হেফাজতে ছিল বলে জানায়।

পরে ৪ নভেম্বর রাতে হাটহাজারী থানার একটি বিশেষ টিম রাউজান থানাধীন নোয়াপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. সাকলাইন হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তার হেফাজত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

সব প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান পুলিশের এ মুখপাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *