আজকাল কম বয়সের মধ্যেই হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং চলাফেরার অভাব একসাথে হার্টের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। হার্টের রক্তনালী ধীরগতিতে বন্ধ হয়ে গেলে (যাকে করনারি আর্টারি ডিজিজ বলা হয়) তা হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সময়মতো সতর্ক হলে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো সম্ভব। শরীর কিছু প্রাথমিক সংকেত দিয়ে দেয়, যা খেয়াল করলে হার্ট সুস্থ রাখা যায়।
চলুন জেনে নিই হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার সাতটি প্রাথমিক লক্ষণঃ
১. বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভব করা
যখন হার্টে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, তখন বুকে চাপ, আঁটসাঁট ভাব বা ব্যথা অনুভূত হয়। হাঁটাচলা, ব্যায়াম বা মানসিক চাপের সময় ব্যথা বাড়তে পারে। বিশ্রাম নিলেও কমতে না পারলে এটিকে অবহেলা করা বিপজ্জনক।
২. হঠাৎ শ্বাসকষ্ট
সাধারণ হাঁটা বা সিঁড়ি ওঠার সময় শ্বাসকষ্ট স্বাভাবিক নয়। হঠাৎ হাপিয়ে ওঠা বা শ্বাস নিতে কষ্ট হলে হার্টের রক্তপ্রবাহে ঘাটতির ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. অস্বাভাবিক ক্লান্তি
ছোট কাজ করেও যদি দ্রুত ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভূত হয়, তা চিন্তার বিষয়। হার্ট ঠিকভাবে রক্ত পাম্প না করলে শরীর অতিরিক্ত শক্তি খরচ করে, ফলে হালকা কাজেও ক্লান্তি দেখা দেয়।
৪. মাথা ঘোরা বা ঝিমঝিম ভাব
হার্টের ব্লকেজ মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে মাথা হালকা লাগা, চোখের সামনে অন্ধকার দেখা বা ঘোরা অনুভূত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫. অনিয়মিত বা দ্রুত হার্টবিট
হঠাৎ হৃদস্পন্দন দ্রুত বা এলোমেলো হলে তা হার্টের দুর্বলতার ইঙ্গিত হতে পারে। রক্ত সঞ্চালনে বাধা পেলে হার্টকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়, ফলে হার্টবিট অনিয়মিত হয়ে যায়।
৬. শরীরের অন্য অংশে ব্যথা ছড়ানো
কাঁধ, হাত, গলা, চোয়াল বা পিঠে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সাধারণত এটি শরীরের বাঁদিকে বেশি অনুভূত হয়, তবে ডানদিকেও হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
৭. হঠাৎ ঠাণ্ডা ঘাম
কারণ ছাড়াই ঠাণ্ডা ঘাম হওয়া, শরীর আঠালো বা ক্ল্যামি মনে হওয়া হার্টে চরম চাপের ইঙ্গিত দিতে পারে। যদি এটি অন্যান্য লক্ষণের সঙ্গে দেখা দেয়, দ্রুত চিকিৎসা জরুরি।
এই সতর্ক সংকেতগুলো উপেক্ষা করলে ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাকের মতো গুরুতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং জীবনধারায় পরিবর্তন আনা শুরু করুন।
