নির্বাচন, বিচার ও দেশে ফেরা নিয়ে রয়টার্সকে যা বললেন হাসিনা

নির্বাচন, বিচার ও দেশে ফেরা নিয়ে রয়টার্সকে যা বললেন হাসিনা

বহু বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ইঙ্গিত দিলেন, হয়তো তিনি আর সেই জায়গায় ফিরছেন না। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার পর এটাই তার প্রথম আন্তর্জাতিক সাক্ষাৎকার, যা প্রকাশ করেছে রয়টার্স বুধবার (২৯ অক্টোবর)।

সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা জানান, তিনি বা তার পরিবারের কেউই ভবিষ্যতে আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকতে নাও পারেন। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন, এবং ক্ষমতা হারানোর পর এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক মন্তব্য।

শেখ হাসিনা রয়টার্সকে বলেন “এটা আমি বা আমার পরিবারের বিষয় নয়। বাংলাদেশ যে ভবিষ্যৎ চায় তা অর্জন করতে হলে সাংবিধানিক শাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই হবে। কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবার দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।”

তবে তার এই বক্তব্য ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আগের মন্তব্যের সঙ্গে কিছুটা ভিন্ন। গত বছর ওয়াশিংটনে বসবাসরত জয় রয়টার্সকে বলেছিলেন, “দলীয় অনুরোধ এলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।” ফলে আওয়ামী পরিবারের মধ্যেই এখন অবস্থানের পার্থক্য স্পষ্ট।

বর্তমানে আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দেশে নিষিদ্ধ। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা রয়টার্সকে বলেন, “আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত কোনো সরকারের অধীনে আমি দেশে ফিরব না। আপাতত আমি ভারতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেবল অন্যায় নয়, এটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।”

দেশে ফেরা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি দেশে ফিরতে চাই। তবে শর্ত একটাই সেখানে বৈধ সরকার থাকতে হবে, সংবিধান অটুট থাকতে হবে এবং প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকতে হবে।”

তবে তার দেশে ফেরা এখনও অনিশ্চিত। কারণ, জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর সহিংস দমনপীড়ন, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার যে কোনো বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *